ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজধানীতে ৫৬৮টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত

365

ঢাকা, ৫ জুন, ২০১৯ (বাসস) : ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এবার রাজধানীতে ৫৬৮টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে এসব ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়।
সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দুই সিটিতেই প্রতিটি ওয়ার্ডের মসজিদ, মাঠ ও ঈদগাহে ৪ বা ৫টি করে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র কার্যালয়ের কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় বাসসকে জানান, এবার ডিএসসিসি’র ৭৪টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতে ৪টি করে এবং জাতীয় ঈদগাহ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠসহ মোট ২৯৮টি স্থানে ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার জানান, এই সিটি কর্পোরেশনের ৫৪টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৫টি করে মোট ২৭০টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানী ঢাকায় প্রধান ঈদ জামাত হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হাসান, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের লাখো মানুষ উৎসব আমেজে সেখানে নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাতের ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন জাতীয় ঈদগাহের এ জামাতের আয়োজন করে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ঈদগাহে পৌঁছলে সিটি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন তাঁকে স্বাগত জানান।
এ প্রধান জামাতে মহিলা ও বিদেশী কূটনীতিকদের নামাজ আদায়ে বিশেষ ব্যব¯’া ছিল। মুসুল্লিদের জন্য ওযু, খাবার পানি ও মোবাইল টয়লেটেরও ব্যব¯’া ছিল।
জাতীয় ঈদগাহে সুষ্ঠুভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠানে নেয়া হয় তিন স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঈদগাহে সকল প্রবেশ পথ এবং ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের নামাজের ¯’ানসহ ঈদগাহ মাঠের গোটা প্যান্ডেলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। মুসল্লিদের ঈদগাহে প্রবেশের আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির পর আর্চওয়ে দিয়ে প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে হয়।
প্রধান এ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাদা পোশাকে র‌্যাব এবং পুলিশ সদস্যরা ঈদগাহে সার্বক্ষণিক তৎপর ছিলেন।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে এবারও ৫টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত হয় সকাল ৭টায়। এর পরপর আরো ৪টি জামাত হয় যথাক্রমে ৮টা, ৯টা, ১০টা ও পৌনে ১১টায়। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী, দ্বিতীয় জামাতে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মহিউদ্দিন কাসেম, তৃতীয় জামাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ড. মাওলানা মুশতাক আহমাদ, চতুর্থ জামাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস মাওলানা ওয়ালীয়ূর রহমান খান এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক মাওলানা জুবাইর আহাম্মদ আল আযহারী ইমামতি করেন।
জাতীয় সংসদ ভবনে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদুল ফিতরের জামাতের আয়োজন করা হয়। এখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি, হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, জাতীয় সংসদের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভপিতি মো. নাসিম এমপি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, জাতীয় সংসদের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোঃ মুজিবুল হক এমপি, স্পিকারের স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসাইন, মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবগ্র্, সংসদ –সদস্যবৃন্দ, সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারীবৃন্দ এবং এলাকার সাধারণ মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ, সৃখ-শান্তি সমৃদ্ধি ও জাতীয় অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআয় ঈদের দু’টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায় এবং দ্বিতীয় জামাত হয় সকাল ৯টায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মেইন গেইট সংলগ্ন মাঠে সাড়ে ৮টায় ও ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল লনে সকাল ৮টায় পৃথক দু’টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া রাজধানীর মীরবাগ জামে মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।