দেশের প্রধান ঈদ জামাতের জন্য জাতীয় ঈদগাহ প্রস্তুত

208

ঢাকা, ১৪ জুন, ২০১৮ (বাসস) : রাজধানীর সুপ্রিমকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে দেশের প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। লাখো মুসল্লীর নামাজ আদায়ের জন্য জাতীয় ঈদগাহ এখন প্রস্তুত।
শুক্রবার চাঁদ দেখা গেলে শনিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। জাতীয় ঈদগাহে দেশের প্রধান ঈদ জামাত সকাল সাড়ে ৮ টায় অনুষ্ঠিত হবে। নামাজে ইমামতি করবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় ঈদগাহ পরিদর্শন করেছেন।
ঈদগাহের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী মো. আবুল হাসেম আজ বৃহস্পতিবার বাসস’কে বলেন, ‘ঈদের প্রধান জামায়াতের জন্য জাতীয় ঈদগাহ এখন প্রায় প্রস্তুত। বৃষ্টির বিষয়টি মাথায় রেখে পুরো মাঠ ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ফ্যান, লাইটসহ যাবতীয় কাজও ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’
আবুল হাসেম জানান, মাঠের আশপাশের গাছপালার গুড়িসহ মাঠের রঙের কাজ শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, ময়দানের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কিছু কাজ ঈদের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। মাটিতে ত্রিপল ও চাদর বিছানোর কাজ ঈদের আগের রাতে করতে হয়। এটা বাদে সব কাজ শেষ করেছি আমরা।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পিয়ারু অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটর ঈদগাহ প্রস্তুতির দায়িত্ব পালন করছে। জানতে চাইলে এখানকার একজন কর্মকর্তা বাসস’কে বলেন, আট রমজান থেকে ঈদ জামাতের জন্য মাঠ প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়। এখানে দুই শতাধিক কর্মচারী কাজ করেছে এবার। পুরো মাঠ প্রস্তুতে ৪৩ হাজার বাঁশ, ৪শ’ মোটা পাইপ, ৮০টি গজারি গাছের কাঠ দিয়ে প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রতিবছরই রাষ্ট্র্রপতি, প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতি, মন্ত্রী, এমপি, কূটনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এই জামাতে অংশ নিয়ে থাকেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, আবহাওয়া ভালো থাকলে ১ লাখের বেশী মুসল্লী ঈদের নামাজ আদায় করবেন। পাঁচ হাজার নারী মুসল্লিও ঈদের জামাতে অংশ নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, ঈদগাহ ময়দানকে বৃষ্টির প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখতে মাঠের ২ লাখ ৭০ হাজার ২৭৭ বর্গফুট এলাকা বৃষ্টি প্রতিরোধক ত্রিপল দিয়ে আচ্ছাদিত করে দেওয়া হয়েছে। ময়দানে ৭শ সিলিং ও ১০০ টি স্ট্যান্ড ফ্যান লাগানো হয়েছে। এখানে পুরুষদের জন্য ১৪০টি এবং নারীদের জন্য ৫০টি অজুর কল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহ এলাকায় একটি ভ্রাম্যমাণ শৌচাগারও রাখা থাকবে।
ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শনে এসে ডিএসসিসি’র মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, পানযোগ্য পানিসহ থাকবে পর্যাপ্ত টয়লেট। ঈদগাহে মুসল্লিদের জরুরি স্বাস্থ্য সেবাদানে মেডিকেল টিম প্রস্তুত থাকবে। সার্বক্ষণিক নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং জেনারেটর স্ট্যান্ডবাই থাকবে।
মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ঈদগাহে সার্বিক নিরাপত্তায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা থাকবে। এজন্য পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অগ্নিকা-ের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিস সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকবে বলে জানান তিনি। মেয়র বলেন, যদি আবহাওয়াজনিত কারণে কোনো দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি হয় তাহলে ঈদের প্রধান জামাত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সকাল নয়টায় অনুষ্ঠিত হবে।
ঈদ জামাত চলাকালীন আবহাওয়াজনিত কারণে বজ্রপাত ঠেকাতে ঈদগাহে বজ্র প্রতিরোধক দ- স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।