বাসস ক্রীড়া-১১ : সাকিব-মুশফিকের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৩০ রান

323

বাসস ক্রীড়া-১১
ক্রিকেট-বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা
সাকিব-মুশফিকের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৩০ রান
লন্ডন, ২ জুন ২০১৯ (বাসস) : সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের কেনিংটন ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩০ রানের বড় সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।
কেনিংটন ওভালের রৌদ্রজ্জল আবহাওয়াতে টস ভাগ্যে জয় পাননি বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তাই দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাফ ডু-প্লেসিসের সিদ্বান্তে প্রথমে ব্যাট হাতে নামতে হয় বাংলাদেশ। আমন্ত্রন সাদরে গ্রহণ করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। ব্যাট হাতে নেমে বেশ দেখেশুনেই খেলতে থাকেন দু’জন। তাই প্রথম ৪ ওভারে ১৪ রান পায় বাংলাদেশ। এই ১৪ রানের মধ্যে মাত্র একটি বাউন্ডারি ছিলো টাইগারদের। তাও প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে।
তবে উইকেটের সাথে সেট হতে খুব বেশি সময় নেননি সৌম্য। পঞ্চম ওভারে ৩টি চারে নিজের আত্মবিশ্বাসী রুপ ফুটিয়ে তুলেন তিনি। সৌম্যকে দেখে নিজেকে গুটিয়ে রাখতে পারেননি অন্যপ্রান্তে থাকা তামিম। পরের ওভারে নিজের প্রথম বাউন্ডারি হাকান এই বাঁ-হাতি। এরপর আর থেমে থাকেনি বাংলাদেশের রান তোলার গতি। কারন মারমুখী মেজাজ দেখান সৌম্য। ৭ ওভারেই ৫০ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
তবে নবম ওভারে বাংলাদেশের উদ্বোধণী জুটিকে বিচ্ছিন্ন করে দেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার আন্দিল ফেলুকুয়াও। ২টি চারে ২৯ বলে ১৬ রান করা তামিমকে থামান ফেলুকুয়াও। কিছুক্ষন বাদে আউট হন সৌম্যও। দুর্দান্ত শুরু করা সৌম্য এবার হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নিতে ব্যর্থ হন। ৯টি চারে ৩০ বলে ৪২ রান করেন সৌম্য।
৭৫ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর বাংলাদেশের হাল ধরেন বাংলাদেশের তিন ও চার নম্বর ব্যাটসম্যান যথাক্রমে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। দু’জনের ব্যাটিং ভেল্কিতে লাইন-লেন্থহীন হয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং। অবলীলায় বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডকে ভারী করতে থাকেন সাকিব-মুশফিক।
১৬ ওভারে ১০০, ২৪ ওভারে ১৫০ ও ৩২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ২০০ রানে নিয়ে যান সাকিব-মুশফিক। ততক্ষনে দু’জনই তুলে নেন হাফ-সেঞ্চুরি। সাকিব ৪৩ ও মুশফিক ৩৪তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। দু’জনের ব্যাটিং নৈপুন্য আভাস দিচ্ছিলো- দু’টি সেঞ্চুরির। কিন্তু ৩৩তম ওভারে ভেঙ্গে যায় সাকিব-মুশফিক দুর্দান্ত জুটিটি। দক্ষিণ আফ্রিকার লেগ-স্পিনার ইমরান তাহির থামিয়ে দেন সাকিবকে। সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন সাকিব। ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৮৪ বলে ৭৫ রান করেন সাকিব। তৃতীয় উইকেটে ১৪১ বলে ১৪২ রান যোগ করেন সাকিব-মুশকিক।
সাকিব ব্যর্থ হলেও, মুশফিকের সেঞ্চুরি দেখার অপেক্ষায় ছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হন। ৮টি চারে ৮০ বলে ৭৮ রান করেন মুশি। মুশফিক ফিরে যাবার আগে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন পাঁচ নম্বরে নামা মোহাম্মদ মিথুন। মারমুখী মেজাজে শুরু করা মিথুন ২১ বলে করেন ২১ রান। তার ছোট্ট ইনিংসে ছিলে ২টি চার ও ১টি ছক্কা।
দলীয় ২৫০ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তখন ইনিংসের ৪৭ বল বাকী ছিলো। এ অবস্থায় বাংলাদেশের ক্রিকেপপ্রেমিদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছিলো, লাল-সবুজের দল কি- ৩শ রানের কোটা স্পর্শ করতে পারবে??
আর এটি নির্ভর করছিলো বাংলাদেশের মিডল-অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের উপর। ষষ্ঠ উইকেটে মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে ভয়ংকর রুপ নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের উপর চড়াও হন দু’জন। ফলে ৪৮তম ওভারেই ৩শ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ৪৯তম ওভারের শেষ বলে আউট হন মোসাদ্দেক। মাহমুদুল্লাহ’র সাথে ষষ্ঠ উইকেটে মাত্র ৪১ বলে ৬৬ রান যোগ করেন আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ২৭ বলে অপরাজিত ৫২ রান করা মোসাদ্দেক। এবার মোসাদ্দেক করেন ২০ বলে ৪টি চারে ২৬ রান।
আট নম্বরে নামা মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে পরবর্তীতে ইনিংস শেষ করেন মাহমুদুল্লাহ। মাহমুদুল্লাহ’র ৩৩ বলে অপরাজিত ৪৬ রানের সুবাদে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩০ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহর ইনিংসে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। মিরাজ ৩ বলে ৫ রানে অপরাজিত থাকেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ফেলুকুওয়াও-ক্রিস মরিস ও তাহির ২টি করে উইকেট নেন।
বাসস/এএসজি/এএমটি/২০০৫/স্বব