বাসস দেশ-২৭ : ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩০ জুলাই

154

বাসস দেশ-২৭
ট্রাইব্যুনাল-আদেশ
ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩০ জুলাই
ঢাকা, ২৯ মে ২০১৯ (বাসস) : জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালকের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের তারিখ পিছিয়ে আগামী ৩০ জুলাই নির্ধারণ করেছে ট্রাইব্যুনাল।
ওয়াহিদুল হকের (৬৯) বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। আসামিপক্ষে আইনজীবী সময় চেয়ে আজ আবেদন করেন। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল দিন নির্ধারণ করে আজ এ আদেশ দেয়।
প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন সুলতান মাহমুদ সীমন। তাকে সহযোগিতা করেন রেজিয়া সুলতানা চমন ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী। অন্যদিকে ওয়াহিদুল হকের পক্ষে ছিলেন আব্দুস সোবহান তরফদার ও মিজানুর রহমান।
প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী সাংবাদিকদের জানান, হত্যা, গণহত্যা, ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের দিন ঠিক ছিল আজ। আসামিপক্ষ সময় চেয়ে আবেদন করায় আদালত নতুন তারিখ ঠিক করে আদেশ দিয়েছে। তিনি আরও জানান, ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি গতকাল মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার সময়ের আবেদন করলে শুনানির জন্য আদালত আজকের দিন ঠিক করেন। আজ শুনানিতে ওয়াহিদুল হকের পক্ষে নতুন নিয়োগ পাওয়া আরেক আইনজীবী মিজানুর রহমান মামলার প্রস্তুতির জন্য ফের সময় চেয়ে আবেদন করে।
এর আগে গত ৪ মার্চ এই মামলায় অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ২৫ মার্চ দিন ঠিক করে ট্রাইব্যুনাল। এরপর থেকে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু করে প্রসিকিউশন। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাষ্ট্রপক্ষ তাদের শুনানি শেষ করে।
গত বছরের ৩০ অক্টোবর আসামি ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে প্রসিকিউশনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। পরে প্রসিকিউশন পক্ষ তার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর এ মামলার তদন্ত শুরু করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত শেষ হয়। এ মামলায় মোট ৫৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
গত বছরের ২৪ এপ্রিল সকালে আসামি ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওয়াহিদুল হককে তার বারিধারার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন (২৫ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আসামি ওয়াহিদুল হককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেযা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭১ সালে অভিযুক্ত ক্যাপ্টেন ওয়াহিদুল হক রংপুর ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৯ ক্যাভেলরি রেজিমেন্টের অ্যাডজুটেন্ট এর দায়িত্বে ছিলেন। ওই বছরের ২৮ মার্চ আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৪টায় তিনি সেনানিবাসের পাশে চারটি সামরিক জিপে মেশিনগান লাগিয়ে গুলি করে গণহত্যা চালান। এতে ৫শ’ থেকে ৬শ’ স্বাধীনতাকামী বাঙালি নিহত হন এবং অসংখ্য মানুষ গুরুতর আহত হন। সেই সময় তার নেতৃত্বে স্থানীয়দের বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। একইসঙ্গে গণহত্যার শিকার বাঙালিদের মরদেহে পেট্রোল ঢেলে পোড়ানোর পরে ধ্বংসাবশেষ কয়েকটি গর্ত করে পুঁতে ফেলা হয়।
বাসস/এএসজি/ডিএ/১৮৩০/-আসচৌ