বাসস ক্রীড়া-১২ : বিশ্বকাপে পাকিস্তানের অস্ত্র ফখর জামান

277

বাসস ক্রীড়া-১২
ফখর জামান-পাকিস্তান
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের অস্ত্র ফখর জামান
করাচি, ২৭ মে, ২০১৯ (বাসস/এএফপি) : চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতীয় পেসার জসপ্রিত বুমরার নো বলের আগ পর্যন্ত নিজেকে দলে প্রতিষ্ঠায় চেস্টারত নৌবাহিনীর নাবিক ফখর জামান আজ ক্রিকেট বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলের মূল অস্ত্র।
২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালটা যথার্থভাবেই শুরু করেছিল ভারত। বুমরার বলে উইকেটরক্ষক এমএস ধোনির হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন জামান।
কিন্তু বুমরার নো বলের কারণে সে যাত্রায় জীবন পান তিন রান করা জামান। জীবন পেয়েই সুযোগের শতভাগ কাজে লাগান, এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন পাকিস্তানের এ তারকা ব্যাটসম্যান।
জামানের ১১৪ রানের সুবাদে ওভালে অনুষ্ঠিত ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ১৮০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয় করে পাকিস্তান।
তারপর থেকেই পাকিস্তান দলের ব্যাটিং লাইন আপের মূল শক্তিতে পরিণত হয়েছেন জামান এবং আাগমী ৩০মে ইংল্যান্ডে শুরু হওযা বিশ্বকাপে আরো একবার পাকিস্তান দলকে তিনি টেনে তুলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। জামান বলেন, ‘ঐ নো-বল আমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ফাইনাল ম্যাচের আগে আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম-একটি নো-বলে আউট হব এবং সেটা সত্যি হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে এটা ছিল আমার জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। কেননা ঐ ম্যাচটিতে ভাল করব বলে আমি আমার মা-বাবাকে প্রতিশ্রতি দিয়েছিলাম।
ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডেতেই ভারতের বিপক্ষে সে ঐতিহাসিক জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিখ্যাত বনে যান জামান। পাকিস্তানের প্রতিটি ঘরে ঘরে ধ্বনিত হয় তার নাম। হয়ে যান দেশের ‘বীর’।
তবে এ খ্যাতি তাকে লক্ষ্যচ্যুত করতে পারেনি। এখন তার একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে ১৯৯২ আসরের পর পাকিস্তানের হয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ জয় করা।
তিনি বলেন, ‘আমি খুবই ভাগ্যবান ছিলাম এবং সেই সেঞ্চুরির পর আমি বিখ্যাত হয়ে গেছি।’
‘তবে এ সুনামের কারণে দায়িত্বও বেড়ে গেছে এবং এখন আমি আরো বেশি পরিপক্ক হয়েছি, এখন আমার ভূমিকা পালনের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারছি। বিশ্বকাপে এটা হবে আমার অগ্রাধিকার।’
বাম হাতি এ ব্যাটসম্যানের ভাগ্য পক্ষে ছিল । কেননা তিনি তার পিতার পরামর্শে স্থানীয় মারদানে ক্রিকেট খেলতে অস্বীকার করেছিলেন।
জামান পাকিস্তান নৌ বাহিনীতে যোগ দেন। কিন্তু তার স্বপ্নে ছিল ক্রিকেট।
তিনি নৌ বাহিনীর হয়ে খেলতে থাকেন এবং ভাল খেলে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন পুরণ করেন।
২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মাত্র তিন মাস আগে পাকিস্তান সুপার লীগে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে নিষিদ্ধ হন পাকিস্তান ওপেনার শারজিল খান।
জামানের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং কোচ মিকি আর্থার ও প্রধান নির্বাচক ইনজামাম উল হককে মুগ্ধ করে।
একজন আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান হিসেবে তারা তাৎক্ষণিকভাবে জামানকে দলে নির্বাচন করে এবং তিনি তার পর থেকে ৩৬ ওয়ানডে ম্যাচ ক্যারিয়ারে গড়ে ৫১ দশমিক ৩১ রান করে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন।
পিছনের কথা স্মরণ বরে ইনজামাম বলেন,‘ ফখরকে আমি একজন গেম চেঞ্জার হিসেবে দেখেছি। শারজিলের পরিবর্তে আমরা কাউকে খুজছিলাম এবং ফখরকে দেখার পর আমরা ভাবলাম ‘ এখানেই আমাদের পছন্দ পেয়ে গেছি’।’
‘সে তার প্রতিশ্রতি রক্ষা করেছে এবং বিশ্বকাপে আমরা তাকে একজন এ্যাঙ্কর হিসেবে দেখছি।’
এক সময় নৌবাহিনীতে চাবুরি করায় সতীর্থদের কাছ থেকে‘ সৈনিক’ খ্যাতি পাওয়া ২৯ বছর বয়সী জামান পাকিস্তানের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। গত বছর জিম্বাবুয়ের মাটিতে ডাবল সেঞ্চুরি করা এ ব্যাটসম্যান ভাল করেই জানেন বিশ্বকাপে দেশের হয়ে তার কি করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমার কাজ হচ্ছে রান করা এবং আমি সেটা করছি। আমি জানি কঠোর প্ররিশ্রমের ফল পাবই।’
বাসস/এএফপি/স্বব/১৯১৫/মোজা/এএমটি