বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ জাতির পিতার নীতি ও আদর্শকে অনুসরণ করছে : রাষ্ট্রপতি

255

ঢাকা, ২২ মে, ২০১৯ (বাসস) : রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ জাতির পিতার এ নীতি ও আদর্শকে অনুসরণ করছে।
আগামীকাল ২৩ মে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও ক্যুরি’ শান্তিপদক প্রাপ্তির ৪৬তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আজ এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
জুলিও ক্যুরি বঙ্গবন্ধু সংসদ’ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও ক্যুরি’ শান্তিপদক প্রাপ্তির ৪৬তম বার্ষিকী উদযাপন করছে জেনে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে তিনি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান ।
তিনি বলেন, জাতির পিতা ছিলেন বিশ্বের মুক্তিকামী, নিপীড়িত, মেহনতি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা। শান্তি, সাম্য, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। জেল, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করেছেন। তাঁর অতুলনীয় সাংগঠনিক ক্ষমতা, রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞা, মানবিক মূল্যবোধ, ঐন্দ্রজালিক ব্যক্তিত্ব বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ করে। তাঁর নির্দেশে বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, অভ্যূদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের।
রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধু বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন দর্শন প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংঘাতময় পরিস্থিতি উত্তরণে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। জাতির পিতা ছিলেন বিশ্বে নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর। তাঁর সাহসী উচ্চারণ ছিল, ‘পৃথিবী আজ দুইভাগে বিভক্ত শোষক আর শোষিত, আমি শোষিতের পক্ষে’।
তিনি বলেন, বিশ্বশান্তি পরিষদের শান্তিপদক কমিটি জাতির পিতার কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৩ সালের ২৩ মে তাঁকে ‘জুলিও ক্যুরি’ শান্তিপদকে ভূষিত করে। এটি ছিল বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘এ সম্মান কোন ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়। এ সম্মান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদদের, স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানীদের। ‘জুলিও ক্যুরি’ শান্তিপদক সমগ্র বাঙালি জাতির।
আবদুল হামিদ বলেন, জাতির পিতা ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বৈরিতা নয়’ এবং ‘সকল বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান’কে পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। বাংলাদেশ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার নীতি ও আদর্শকে অনুসরণ করছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বিরোধ নিষ্পত্তিতে এ নীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা ‘রূপকল্প ২০২১’ ও ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত এবং শান্তি ও সমৃদ্ধপূর্ণ দেশে পরিণত করতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।’
তিনি জুলিও ক্যুরি বঙ্গবন্ধু সংসদ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও ক্যুরি’ শান্তিপদক প্রাপ্তির ৪৬তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।