বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

320

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-স্বদেশ প্রত্যাবর্তন
জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের কাছে এতটুকু চাইব, জনগণের এই আস্থা ও বিশ্বাসকে যেন আমরা ধরে রাখতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত জীবনে কী পেলাম, না পেলাম সেই চিন্তা না করি। দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কতটুকু দিতে পারলাম-সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা।’
আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে বিভিন্ন সময়ের ষড়যন্ত্র ও প্রতিকূল পরিবেশে আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানোর উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘যারা বারবার চেয়েছে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে তারা সফল হয়নি। আওয়ামী লীগ কিন্তু আওয়ামী লীগের মতোই ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে।’
ছাত্রজীবনে রাজনীতির স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্কুলজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। তারপর কলেজে গিয়ে, ইউনিভার্সিটিতে তখনো ছাত্রলীগেরই সদস্য ছিলাম। আমার রাজনীতি ছাত্র রাজনীতি থেকেই শুরু। তবে কখনো কোনো বড় পোস্টে ছিলাম না, পোস্ট চাইনি কখনো।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির একজন সদস্য ছিলাম। কখনো পদ নিয়ে চিন্তা করিনি, পদ চাইওনি। আমরা পদ সৃষ্টি করে সবাইকে পদে বসানোর দায়িত্বটাই পালন করতাম।’
বিদেশে নির্বাসিত অবস্থায় আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘৭৫ এর পর এত বড় দায়িত্ব আমাকে নিতে হবে- এটা কখনো ভাবিনি, চাইওনি, এটা চিন্তাও ছিল না।’
১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরার সময় ঝঞ্ঝা বিক্ষুদ্ধ একটি দিনে লাখো জনতার বৃষ্টিস্নাত প্রাণঢালা সাদর সম্ভাষণের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা।
মাত্র ১৫ দিন আগেই স্বামীর কর্মস্থল জার্মানীতে ছোট বোনকেসহ যাবার স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
‘সেদিন সবাই ছিল, পরিবারের সবাই বিমান বন্দরে বিদায় জানাতে এসেছিল। আর মাত্র ১৫ দিন পরেই নি:স্ব, রিক্ত, অসহায় হয়ে গেলাম, দেশেও ফিরতে দেওয়া হলো না’,বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যেদিন ফিরেছিলাম সেদিন আকাশ ছিল ঘন মেঘে ঢাকা। প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি, সে বৃষ্টি উপেক্ষা করে আমি দেখেছি হাজার হাজার মানুষ, এয়ারপোর্ট থেকে মানিকমিয়া এভিনিউর সমাবেশ স্থলে ট্রাকে চেপে পৌঁছতে ৪ ঘন্টা লেগে যায়, লাখো মানুষের ঢল।’
১৯৮১ সালের এদিন দীর্ঘ নির্বাসন শেষে শেখ হাসিনা বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িংয়ে করে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার সময় তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পান।
পরবর্তীতে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
এরপর থেকে তিনি টানা ৩৮ বছর বাংলাদেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর একবার এবং ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে টানা তিনবার মিলিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে চতুর্থ বারের মত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা।
বাসস/এএসজি-এফএন/২০৪০/জেহক