হবিগঞ্জে অটোরাইস মিলসহ সাইলো নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার

184

হবিগঞ্জ, ১৪ মে, ২০১৯ (বাসস) : ধান-চাল সংরক্ষণের মাধ্যমে কৃষকদের সহযোগিতার লক্ষ্যে বৃহদাকার অটো রাইসমিলসহ সাইলো নির্মাণের পরিকল্পনা করছে খাদ্য অধিদপ্তর।
খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরিফুর রহমান সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন খাদ্যগুদাম পরিদর্শন শেষে এই প্রতিবেদককে তার পরিকল্পনার কথা জানান।
তিনি বলেন, হবিগঞ্জ একটি খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা। কিন্তু এখানে বড় কোন অটো রাইস মিল না থাকায় এখানকার ধান চলে যায় ব্রাহ্মনবাড়িয়ার আশুগঞ্জে। সেখান থেকে চাল হয়ে তা আবার আসে হবিগঞ্জে। এতে করে চালের দাম যেমন বেশী পড়ে তেমনিভাবে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখিন হয়। তাই সরকার এখানে বড় অটোরাইসমিলসহ সাইলো নির্মানের বিষয়টি বিবেচনা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর ফলে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করা যাবে এবং তারা উপকৃত হবেন। একেকটি সাইলোতে ৩০ হাজার মে. টন ধান সংরক্ষণ করার সুযোগ রয়েছে।’
তিনি জানান, এ ধরনের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে দেড়শ’ কোটি টাকা প্রয়োজন হয়। এ ব্যাপারে প্রকল্প তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আগামি দুই-তিন মাসের মাঝেই প্রকল্প গ্রহন করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
হবিগঞ্জে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, জেলায় মোট ধান উৎপাদন হয় প্রায় ৯ লাখ মে.টন। এর মধ্যে বোরো ৫ লাখ মেট্রিক টন। আউশ ও আমন ও রোপা আমন মিলে হয় ৪ লাখ মে.টন। এই জেলার নিজস্ব চাহিদা হল ৪ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন। আর উদ্বৃত্ত হল ৮ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। এই জেলায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক অটো রাইসমিল থাকলে কৃষকরা সাথে সাথে ধান কেটে মিলে নিয়ে এসে চাউল করাতে পারতেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জের সবচেয়ে বেশী বোরো ধান উৎপাদন হয় বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলায়। তাই হাওরাঞ্চলের এই দুই উপজেলার মধ্যবর্তি আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশায় ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধারন ক্ষমতার একটি ধানের সাইলো নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এছাড়াও, শায়েস্তাগঞ্জ খাদ্যগুদামে হতে পারে ৩০ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশী ধারন ক্ষমতার একটি সাইলো।
হবিগঞ্জের জেলা খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান, এই জেলার ৯টি উপজেলায় বর্তমানে ১০টি খাদ্যগুদাম রয়েছে। এসকল গুদামের ধারন ক্ষমতা সাড়ে ১৫ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে গুদামগুলোর ধারন ক্ষমতা আরও ৭ হাজার টন বৃদ্ধির কার্যক্রম চলছে। এই কাজ শেষ হলে মোট ক্ষমতা হবে সাড়ে ২২ হাজার মেট্রিক টন।
তিনি জানান, জেলায় মোট ৮৮টি রাইস মিল রয়েছে। এর মধ্যে ৬২টি আতপ এবং ২৬টি সিদ্ধ চালের। মাত্র ৫টি মিল অটো। ফলে হবিগঞ্জের ধান অন্যত্র চলে যায় এবং অন্য জেলা থেকে চাল আসে।