বাসস ক্রীড়া-১ : বিশ্বকাপ শেষে ওয়ানডে ক্রিকেটকে অবসর জানানো পাঁচ তারকা ক্রিকেটার

283

বাসস ক্রীড়া-১
বিশ্বকাপ-অবসর
বিশ্বকাপ শেষে ওয়ানডে ক্রিকেটকে অবসর জানানো পাঁচ তারকা ক্রিকেটার
ঢাকা, ১১ মে, ২০১৯ (বাসস/আইসিসি) : ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ২০১৯ বিশ্বকাপের বাকি মাত্র বিশ দিন। অনেক খেলোয়াড়ই মেগা এ ইভেন্ট দিয়ে এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
অবসরের ঘোষনা দেয়া পাঁচ তারকা ক্রিকেটার হলেন :

ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) :
দীর্ঘ সাত মাস পর গত ফেব্রুয়ারিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে ফেরেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এ বিগ হিটিং ব্যাটসম্যান।
একজন ওয়ানডে খেলোয়াড় হিসেবে দারুণভাবে নিজের শেষ পর্ব শুরু করেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচের আগ মুহুর্তে ঘোষণা দেন বিশ্বকাপ হবে তার শেষ ওয়ানডে টুর্নামেন্ট।
ওয়ানডে র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ দল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই সেঞ্চুরি এবং দুই হাফ সেঞ্চুরিতে চার ইনিংসে ৪২৪ রান করেন তিনি। এমন অসাধারণ পারফরমেন্সের পরই জনগণের জিজ্ঞাসা-কেন তিনি অবসর নিচ্ছেন।
আসন্ন বিশ্বকাপে একই ফর্ম ধরে রাখতে পারলে ১৯৭৯ আসরের পর প্রথমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে গেইল এনে দিতে পারেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব।

জেপি ডুমিনি (দক্ষিণ আফ্রিকা) :
দক্ষিণ আফ্রিকার এ অলরাউন্ডার আন্তর্জাতিক টি-২০ চালিয়ে যাবেন। তবে বিশ্বকাপের পর তাকে আর এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে দেখা যাবেনা।
ইনজুরির কারণে বেশ কয়েক মাস মাঠের বাইরে থাকার পর গত মার্চে ডুমিনি ৫০ ওভার ফর্মেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। নিজ শহর কেপ টাউনে দেশের হয়ে শেষ ওয়ানডে খেলার পর দিনই খবরটি কাশিত হয়- বিশ্বকাপের পর আর এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবেন না তিনি।
কলম্বোতে শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচে ডুমিনির ওয়ানডে অভিষেক ঘটে। পুরো ক্যারিয়ারেই বার বার ইনজুরিতে পড়েছেন তিনি। তা সত্ত্বেও ৫০৪৭ রান নিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে দেশের শীর্ষ দশ স্কোরারের মধ্যে একজন ডুমিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে দুইশ’ ওয়ানডে খেলা তালিকায় অষ্টম স্থানে আছেন তিনি।

ইমরান তাহির (দক্ষিণ আফ্রিকা) :
অন্য কোন কিছু করার চেয়ে নিজের উদযাপনের মাধ্যমে ক্রিকেট মাঠে বহু দূর এসেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এ লেগ স্পিনার। তবে আসন্ন বিশ্বকাপের পর আর তাকে ওয়ানডে মাঠে দেখা যাবেনা।
ডুমিনি মত তাহিরও আন্তর্জাতিক টি-২০ চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। কেননা সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটেই তিনি সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং সেরা নৈপুণ্য প্রদর্শন করে চলেছেন। তবে অসাধারণ ২৪ দশমিক ২১ গড়ে ১৬৩ উইকেট শিকার করে তিনিই যে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা স্পিনার সে ইতিহাস পরিবর্তন করা যাবেনা।

শোয়েব মালিক (পাকিস্তান) :
সাময়িকভাবে ভাল ব্যাটসম্যান, দক্ষ অফ স্পিনার, অসাধারণ ফিল্ডার এবং সফল অধিনায়ক শোয়েব মালিক দীর্ঘ দিন যাবত পাকিস্তানের সবচেয়ে শক্তিশালী, নির্ভরযোগ্য এবং সম্পূর্ণ ক্রিকেটারদের একজন।
১৯৯৯ সালে অভিষেক হওয়ার পর ২৮৩ ওয়ানডে খেলা অভিজ্ঞ মালিকের রান সংখ্যা ৭৪৮১। এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীদের তালিকায় পঞ্চম স্থানে থাকা এ অলরাউন্ডার দখলে রয়েছে ১৫৬ উইকেট এবং ৯৬ ক্যাচ। গত বছর জুন মাসে পাকিস্তান দলের জিম্বাবুয়ে সফরের আগে ঘোষণা দেন আসন্ন বিশ্বকাপেই ঘটবে তার দুই দশকের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সমাপ্তি।
বেশ কয়েকজন নিয়মিত ও সিনিয়র খেলোয়াড়ের অনুপুস্থিেিত গত মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে দ্বিতীয় সারির পাকিস্তান দলের নেতৃত্ব দেন তিনি। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াউটওয়াশ হয় স্বাগতিক পাকিস্তান। তবে তার অভিজ্ঞতা এবং সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা আসন্ন বিশ্বকাপে সরফরাজ আহমেদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।

ডেল স্টেইন (দক্ষিণ আফ্রিকা) :
এক সময় আইসিসি বোলিং র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষে থাকা এ বোলারের ইনজুরি যেন নিত্যসঙ্গী। তবে গত এক বা দুই বছর যাবত কাঁধের সমস্যাটা যেন তার পিছু ছাড়ছেনা। সমস্যাটা না থাকলে নিঃসন্দেহে তিনি থাকতেন বিশ্বের সবচেয়ে গতি সম্পন্ন ও ভীতিকর বোলারদের একজন।
টেস্ট ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বকালের সেরা হলে সিমিত ওভারে স্টেইনের ক্যারিয়াটা তত বেশি আহামরি কিংবা সজ্জিত নয়। আসন্ন বিশ্বকাপের আগে এখনো পুরোপুরি ফিট নন স্টেইন। তথাপি এ মেগা ইভেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকার আশা ভরসার প্রতীকদের একজন হবেন তিনি।
যদিও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়, তথাপি গত বছর জুলাই মাসেই ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরে নিজের ইচ্ছার কথা জানান স্টেইন। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার বেদনা বিধুর বিদায়ের পর এবারের আসরে দলকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে সঠিক সময়ে বিদায় জানাতে মুখিয়ে থাকবেন তিনি।
বাসস/আইসিসি/স্বব/০৯০০/-এএমটি