বাসস ক্রীড়া-৯ : চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঘুরে দাঁড়ানোর ৫টি দুর্দান্ত ম্যাচ

203

বাসস ক্রীড়া-৯
ফুটবল-চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঘুরে দাঁড়ানোর ৫টি দুর্দান্ত ম্যাচ
প্যারিস, ৯ মে ২০১৯ (বাসস/এএফপি) : স্বদেশী লিভারপুলকে অনুসরণ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে ঘুরে দাঁড়ানোর আরো একটি অসাধারণ সফলতার গল্প রচনা করল প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পার। বুধবার অনুষ্ঠিত সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে লুকাস মৌরার হ্যাটট্রিকের বদৌলতে আয়াক্সকে পিছিয়ে দিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে টটেনহ্যাম।
ওই রাতে অনুষ্ঠিত এ্যাওয়ে ম্যাচের শুরুতে গোল হজম করে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে টটেনহ্যাম। ফলে দুই লেগে মিলে বিরতির আগেই ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে প্রিমিয়ার লিগ জায়ান্টরা। কারণ প্রথম লেগে নিজেদের মাঠেই আয়াক্সের কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল স্পার্সরা।
তবে বিরতির পর পাল্টে যায় তাদের রং। একে একে পরিশোধ করে দেন তিনটি গোলই। যার মুল কারিগর মৌরা। তার হ্যাটট্রিকেই শেষ পর্যন্ত ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত হয়েছে টটেনহ্যামের। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ বার্সেলোনাকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত ফাইনালের টিকিট লাভ করা লিভারপুল।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঘুরে দাঁড়ানোর এমন ৫টি অতীত সেরা রেকর্ডের তথ্য নিচে দেয়া হল :
পিএসজিকে হারিয়ে বার্সেলোনা : ২০১৬/১৭ মৌসুমের শেষ ১৬’র লড়াইয়ে প্রথম লেগে বার্সেলোনাকে ৪-০ গোলে পরাজিত করেছিল প্যারিস সেইন্ট-জার্মেই (পিএসজি)। ওই ম্যাচে এঞ্জেল ডি মারিয়ার জোড়া গোলের সঙ্গে যুক্ত হয় কাভানি ও ড্রাক্সলের একটি করে গোল।
তবে ফিরতি লেগে সব জল্পনা কল্পনাকে উপড়ে ফেলে বার্সেলো ৬-১ গোলে পিএসজিকে হারিয়ে শেষ আটে জায়াগা করে নেয়। ওই ম্যাচে বার্সেলোনার হয়ে নেইমার ও রবার্তোর জোড়া গোলের পাশাপাশি গোল করেছেন মেসি, সুয়ারেজ ও কুরজুয়া। পিএসজির হয়ে একমাত্র গোলটি পরিশোধ করেন কাভানি। তারপরও দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৫ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থেকে পরের রাউন্ডের ছাড়পত্র লাভ করে কাতালান জায়ান্টরা। এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে বার্সেলোনাই প্রথম কোন দল হিসেবে ৪-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও ঘুরে দাঁড়ানোর কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হয়।
বার্সেলোনাকে পিছিয়ে দিয়ে রোমার সফলতা : ২০১৭-১৮ মৌসুমেই ভাগ্যদেবতার সহায়তা লাভে ব্যর্থ হয় বার্সেলোনা। কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে বার্সেলোনা ৪-১ গোলে রোমাকে হারিয়ে সেমি-ফাইনালের পথে এগিয়ে যায়। ম্যাচে ডি রোজি ও মানোলাসের আত্মঘাতি গোলের পাশাপাশি বার্সার হয়ে গোল করেন পিকে ও সুয়ারেজ। রোমার হয়ে একটি গোল পরিশোধ করেন জেকো।
প্রথম লেগে ভাগ্য দেবীর কৃপায় দুই গোল পেলেও ফিরতি লেগে ফুটে উঠে বিপরীত চিত্র। ফিরতি লেগে রোমা ৩-০ গোলে হারায় বার্সেলোনাকে। ইতালীয় ক্লাবের হয়ে গোল করেন জেকো, ডি রোজি ও ম্যানোলাস। ফলে ম্যাচটি ৪-৪ গোলে সমতায় থাকলেও এ্যাওয়ে ম্যাচের গোলে সুবাদে ভাগ্য খুলে যায় রোমার। তারাই পেয়ে যায় সেমি-ফাইনালের টিকিট।
ইস্তাম্বুলে লিভারপুল রাত : ২০০৪-০৫ মৌসুমের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে। যেখানে পরস্পরের মুখোমুখি হয় লিভারপুল ও এসি মিলান। ওই ম্যাচের প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় ইতালীয় জায়ান্ট এসি মিলান। ক্রেস্পো দুটি এবং মালদিনি এক গোল করেন। তবে বিরতীর পর দারুনভাগে ঘুরে দাঁড়ায় লিভারপুল। একে একে তিনটি গোলই পরিশোধ করে দেন যথাক্রমে জেরার্ড, সমিচোর, ও আলোনসো। ফলে ৩-৩ গোলে ড্র হয় মূল পর্ব ও অতিরিক্ত সময়ের লড়াই। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে লিভারপুল ৩-১ গোলে এসি মিলানকে হারিয়ে শিরোপা জয় করে।
এসি মিলান বনাম ডিপোর্তিভো লা কারুনার মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনাল : ২০০৩-০৪ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টারের প্রথম লেগে এসি মিলান ৪-১ গোলে ডিপোর্তিভো লা কারুনাকে হারিয়ে একধাপ এগিয়ে যায়। ওই ম্যাচে বিজয়ী দলের হয়ে জোড়া গোল করেছিলেন কাকা। এছাড়া শেভচেঙ্কো ও পিরলো বাকী গোল দুটি করেন। তবে ফিরতি লেগে লা কারুনা ৪-০ গোলে এসি মিলানকে হারিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নেয়। দলের হয়ে গোল করেছেন যথাক্রমে পান্ডিয়ানি, ভালেরোন, লুকি ও ফ্রান। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ গোলে এগিয়ে থেকে সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত করে লা কারুনা।
নাপোলির বিপক্ষে চেলসির সফলতা : ২০১১-১২ মৌসুমের শেষ ১৬’র ম্যাচের প্রথম লেগে নাপোলি ৩-১ গোলে চেলসিকে পরাজিত করে। নাপোলির হয়ে লাভেজ্জির দুই গোলের সঙ্গে এক গোলের যোগান দেন কাভানি। চেলসির হয়ে একমাত্র গোল পরিশোধ করেন হুয়ান মাতা। তবে ফিরতি লেগে নাপোলিকে ৪-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে চেলসি। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে চেলসির হয়ে গোল করেন দ্রগবা, টেরি, ল্যাম্পার্ড ও ইভানোভিচ। নাপোলির হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন ইনলার। দুই লেগে মিলিয়ে ৫-২ গোলে এগিয়ে থেকে পরের রাউন্ড নিশ্চিত করে চেলসি। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে আসরের শিরোপাটিও ঘরে তোলে ইংলিশ জায়ান্টরা।
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/১৭৫১/নীহা