প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনা

812

ঢাকা, ৭ মে, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আজ ঘূর্ণিঝড় ফণী পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনায় মন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় এলাকায় প্রস্তাবিত আরো আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, বাধ নির্মাণ এবং আইসিটি যোগাযোগ ব্যবস্থার আরো উন্নয়ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে মন্ত্রীবর্গ এবং সংশ্লিষ্ট পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বৈঠকে বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে মানুষের পাশাপাশি পশু সম্পদের নিরাপত্তায় উপকূলীয় এলাকায় মুজিব কিল্লা নির্মাণ করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বর্তমানের প্রাথমিক বিদ্যলয়, উচ্চ বিদ্যালয় এবং মসজিদগুলো আরো সংস্কার করতে হবে যাতে দুর্যোগকালীন সময়ে এ সকল প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, তার মন্ত্রণালয় দুর্যোগের সময়ে পশুসম্পদ রক্ষায় ৫৫০ মুজিব কিল্লা সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, উপকূলীয় এলাকায় আরো আড়াই হাজার আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা প্রয়োজন। দেশে বর্তমানে চার হাজার আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। নতুন আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রায় ১০ কোটি টাকা প্রয়োজন। তিনি দুযোর্গের পর ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে দুর্যোগ বীমা চালু করার প্রস্তাব করেন।
ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মুস্তাফা জব্বার আবহাওয়া সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য পেতে একটি আবহাওয়া স্যাটেলাইট হিসাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ করার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে কোন দুর্যোগের সময়ে বর্তমান যোগাযোগ ব্যবস্থা কাজ না করলে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার করে বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। তিনি আরো বলেন, দুর্গত মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বৈঠক পরিচালনা করেন। বৈঠকে দুর্গত এলাকায় আরো নতুন আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন, মেরামত এবং বর্তমান ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলো আরো নিরাপদ করা এবং বাধ নির্মানের সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে স্থানীয় জনগনকে সম্পৃক্ত করে প্রকল্প বাস্তবায়ন মনিটরিং কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করা হয়।
বৈঠকে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে উপকূল এলাকায় ৫,৬৬৫ কিলোমিটার বাধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সকল বাধ দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন। এ জন্য ২৬৩ কোটি টাকা প্রয়োজন।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামূল হক শামিম বলেন, সাম্প্রতিক ঘূার্ণঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পুর্নবাসনে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের একটি টীম কাজ করছে।
দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও এাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ক্যাপটেন (অব.) তাজুল ইসলাম, এলজিআরইডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি’র মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বৈঠকে বক্তব্য রাখেন।
বৈঠকে ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের এবং বিশিষ্ট সঙ্গিত শিল্পী সুবির নন্দি ও পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরির্দশক রৌশন আরার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
বৈঠকে ভবিষ্যৎ দুর্যোগের সময়ে দেশের পূর্ব প্রস্তুতির ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করা হয়।