বাসস দেশ-৩৪ : সুবীর নন্দী’র মৃত্যু : হবিগঞ্জে শোকের ছায়া

119

বাসস দেশ-৩৪
সুবীর নন্দী-শোক
সুবীর নন্দী’র মৃত্যু : হবিগঞ্জে শোকের ছায়া
হবিগঞ্জ,৭ মে, ২০১৯ (বাসস) : একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী’র মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে হবিগঞ্জে। তিনি আজ সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন।
সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের শোক প্রকাশ করছেন। হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির বলেছেন, সুবীর নন্দী ছিলেন হবিগঞ্জ জেলার তথা সারা দেশের গর্ব। তার মৃত্যুতে হবিগঞ্জের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন,“ হবিগঞ্জবাসী যখন আমাকে উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য সর্বদলীয় নাগরিক সংবর্ধনা দেয়; সেখানেও তিনি অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে আমার কর্মকান্ডের প্রসংশা করেছিলেন। তিনি আমাকে কর্মবীর বলে সম্বোধন করেছিলেন। আমি তার এই প্রসংসায় উজ্জীবিত হয়েছিলাম।”
সুবীর নন্দীর শিক্ষক সরকারি বৃন্দাবন কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক নিখিল ভট্টাচার্য্য বলেন, সুবীর আর নেই, এই খবর যেন বিশ্বাসই হতে চায় না। আমি তার এই মৃত্যু সহ্য করতে পারছি না।’
তিনি বলেন,‘ আমি যখন কলেজে হিসাব বিজ্ঞান পড়াতাম, সুবীর তা বুঝতো না বলে আমি ধমক দিতাম। সে তখন শুধু হাসতো। সুবীর অত্যন্ত অমায়িক ছিল এবং গান দিয়ে কলেজকে মাতিয়ে তুলতো।’
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ বলেন, সুবীর নন্দী ছিলেন নিরহংকার এবং অমায়িক মানুষ। তিনি ছিলেন সঙ্গীত ভূবনে উজ্জ্বল নক্ষত্র। আমরা যখন কোনও প্রোগ্রামের জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানাতাম, তিনি অত্যন্ত খুশী মনে তা গ্রহণ করতেন। তার মৃত্যু জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
হবিগঞ্জ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সুবীর নন্দী হবিগঞ্জের সুর বিতানে উস্তাদ বাবর আলীর কাছ থেকে গান শিখেছিল। আমরা যখন ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতাম, তখন সেখানে সে গান গাইতো।
সুরবিতানের সাধারণ সম্পাদক আবুল ফজল বলেন, আমি যে প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক, সুবীর নন্দী সেই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছিলেন বলে আমার আলাদা গর্ব ছিল। তার মৃত্যুতে আজ আমিসহ হবিগঞ্জের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সবাই শোকাহত।
সুবীর নন্দীর ঘনিষ্টজন বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিক বলেন, সুবীর এবং আমি একসাথে ওস্তাদ বাবর আলীর কাছে গান শিখার জন্য যাই। ওস্তাদ আমাদেরকে একসাথে সুতা বেধে দেন। এরপর সে অনেক বড় শিল্পী হয়। ১৯৭১ সালের ৬ মাস যখন হবিগঞ্জে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়, তখন সুবীর নন্দীর নেতৃত্বেই জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়েছিল।
সর্বশেষ জেলা প্রশাসন আয়োজিত বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানে সুবীর নন্দী হবিগঞ্জে এসেছিলেন এবং সেখানে তাকে একুশে পদক পাওয়ার জন্য বিশেষভাবে সম্মাননা জানানো হয়।
বাসস/সংবাদদাতা/কেসি/১৮২২/এএএ