ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে ২৮৫ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ

412

ঢাকা, ১১ জুন, ২০১৮ (বাসস) : ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুদের প্রত্যাহারের লক্ষ্যে ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২৮৫ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে শ্রম মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসনে সম্প্রতি নতুন করে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী জাতীয় পর্যায় থেকে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে শিশুশ্রম নিরসনে কমিটি কাজ করছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সরকার দেশের আড়াই লাখ শিশু শ্রমিককে কারিগরি ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর(ডাইফ)’র মহাপরিদর্শক মো. সামছুজ্জামান ভূইয়া জানিয়েছেন,
শ্রম আইন অনুযায়ী শিশুদের কাজে নিয়োগ করলে মা-বাবা,অভিভাবকসহ নিয়োগকারী কারখানার মালিক-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিধান রয়েছে। সরকার ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ১১টি সেক্টর থেকে ৩৪১টি কারখানায় ৯০৩ জন শিশুকে সনাক্ত করেছে ।
তিনি বলেন, পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটির বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে ৩৮টি কাজকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছরে তৈরি পোশাকশিল্প এবং চিংড়িশিল্পকে শতভাগ শিশুশ্রম মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এ বছরের মধ্যে আরো ১১টি সেক্টরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিশুশ্রম নিরসনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সামছুজ্জামান ভূইয়া বলেন, বর্তমানে দেশের ১৮টি খাতে ১৭ লাখের বেশি শিশু শ্রমিক বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এরমধ্যে ১২ লাখ ৮০ হাজার শিশু শ্রমিক ঝুঁকিপূর্ণ কর্মে নিয়োজিত এবং ২ লাখ ৬০ হাজার শিশু অতি ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এসব শিশুরা হোটেল-রেস্তেরাঁ, ট্যানারি, শিপব্রেকিং পরিবহণ, কৃষি, গৃহকর্ম, নির্মাণ ,ইটভাঙ্গা, লোহা কাটাসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মে নিয়োজিত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ডাইফ বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালিসহ দেশের ৬টি জেলায় বিড়ি ফ্যাক্টরিসহ কয়েকটি কারখানায় শ্রম আইন অমান্য করে শিশুদের কর্মে নিয়োগ করায় মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এরমধ্যে কারিকর বিড়ি ফ্যাক্টরিতে ৭০০জনকে শিশু শ্রমের সঙ্গে নিয়োগ করা হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, শুধু মামলা করে শিশু শ্রম নিরসন করা যাবে না। সরকারের পক্ষ থেকে শিশু শ্রম নিরসনে কারিগরি ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।