বন্ড অপব্যবহারকারীর মুখোশ উন্মোচন করুন : এনবিআর প্রধান

271

ঢাকা, ৫ মে, ২০১৯ (বাসস) : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষায় বন্ড সুবিধার অপব্যবহারকারীর মূখোশ উন্মোচন করার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন,‘বন্ড বা শতভাগ শুল্কমূক্ত সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করে খোলা বাজারে সেই পণ্য বিক্রি করায় কাপড়,সূতা,কালি এবং কাগজশিল্প ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছে। সরকারও এ খাত থেকে রাজস্ব হারাচ্ছে। বন্ড সুবিধার অপব্যবহার রোধে অটোমেশন চালু করা হচ্ছে এবং আইনের সংশোধনসহ সবধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আমি আপনাদের আহ্বান করছি, বন্ড অপব্যবহারকারীদের মুখোশ উন্মোচন করুন। জাতির কাছে তাদের চেহারা তুলে ধরুন। সামাজিকভাবে তাদের মর্যাদা হেয় করুন। দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করুন।’
রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের জন্য ট্যারিফ আধুনিকায়ন এবং তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য খাতের বন্ডেড সুবিধা বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এবং ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জাহিদী সাত্তার,বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বেসরকারিখাত বিশেষজ্ঞ নুসরাত নাহিদ বাবি,এনবিআরের কাস্টমস্ বন্ড কমিশনারেটের জয়েন্ট কমিশনার মো. মসিউর রহমান,ইআরএফ সহসভাপতি সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
এনবিআর প্রধান বলেন, তৈরি পোশাক,কেমিক্যাল এবং চামড়া খাতের বিকাশের জন্য এ শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক বা বন্ড সুবিধা দিচ্ছে সরকার। কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী বন্ডেড সুবিধা নিয়ে আমদানি করা কাঁচামাল খোলা বাজারে বিক্রি করছে। এনবিআর এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি জানান,বন্ডের অবহ্যবহার রোধে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বন্ড অফিস কাজ করছে। গত দেড় মাসে অন্তত ৬০টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স জব্দ করেছে। এগুলোর সব কয়টির লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
মোশাররফ হোসেন বলেন, তৈরি পোশাক খাতে এতো প্রবৃদ্ধির পেছনে বন্ড সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা রয়েছে। বর্তমানে দেশের মোট রফতানির ৮৫ ভাগ আয় আসে তৈরি পোশাক থেকে। পাশাপাশি আমরা অন্যান্য পণ্যের রফতানিও বাড়াতে চায়। এজন্য এগ্রো প্রসেসিং, চামড়াজাত পণ্যসহ আরো কয়েকটি খাতে বন্ড সুবিধার আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য,দেশের শতভাগ রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠানকে কাঁচামাল আমদানিতে বন্ড (শুল্কমুক্ত) সুবিধা দেয় সরকার। কিন্তু এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী বন্ড লাইসেন্স নিয়ে এসব কাঁচামাল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। অনিয়মে জড়িত প্রতিষ্ঠানসমূহের লাইসেন্স বাতিল করছে সরকার।
৬০ জন অর্থনৈতিক সাংবাদিক দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে।