কঙ্গোতে ইবোলায় আক্রান্ত হয়ে ১ হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু

261

কিনশাসা, ৪ মে, ২০১৯ (বাসস ডেস্ক) : গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে ইবোলায় আক্রান্ত হয়ে ১ হাজারের বেশি লোক মারা গেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ একথা জানিয়েছে।
খবর এএফপি’র।
প্রাণঘাতী দ্রুত সংক্রমণশীল ভাইরাসটি ওই অঞ্চলটির জনমনে ‘তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।’
২০১৪-২০১৬ সালের পরে বর্তমানে ভাইরাসটি সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ২০১৪-২০১৬ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় এই ভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে ১১ হাজার ৩শ’র বেশি লোকের প্রাণহানি ঘটায়।
শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ‘এই ভাইরাসজনিত জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মোট ১ হাজার ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।’
গত আগস্ট মাসে মধ্য আফ্রিকার দেশটিতে ৪০ বছরের মধ্যে ইবোলাকে ১০ বারের মতো প্রাদুর্ভাব হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। ভাইরাসটি পার্শ্ববর্তী ইতুরি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার আগে নর্থ কিভু প্রদেশের বেনি নগরীতে প্রথম দেখা দিয়েছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রাথমিকভাবে আশা প্রকাশ করে যে, একটি নতুন প্রতিষেধক আবিষ্কার হওয়ায় তারা এই প্রাদুর্ভাবের মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।
কিন্তু সম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ডব্লিউএইচও এর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা স্বীকার করেন যে অনিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উৎসের অপ্রতুলতা ও স্থানীয় রাজনীতিবিদদের জনস্বাস্থ্যের বিরুদ্ধে অবস্থানের মতো নানা কারণ এই রোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে বড় ধরনের অন্তরায় হিসেবে দেখা দিয়েছে।
এর ফলে আন্তজার্তিক সংস্থাটি প্রত্যাশিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি।

শুক্রবার জেনেভায় ডব্লিউএইচও এর হেলথ ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক মাইকেল রায়ান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা একটি অত্যন্ত কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে কাজ করছি।’
দেশটির ইতুরি ও নর্থ কিভুতে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দীর্ঘ উপস্থিতি ও তৎপরতার কারণে স্বাস্থ্য কর্মীদের ওই এলাকাগুলোতে ঢুকতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। এতে যারা ইবোলায় আক্রান্ত হয়েছে তাদের প্রতিশেধক দেয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে ইবোলায় আক্রান্তদের সংখ্যা ১২ হাজার।
রিয়ান আরো বলেন, মিলিশিয়া ছাড়াও কঙ্গোতে ডিসেম্বেরের নির্বাচনের পরবর্তী পরিস্থিতিও ইবোলা প্রতিরোধকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিকূলে রয়েছে।
রায়ান বলেন, জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থাটির কাছে যথেষ্ট পরিমানে প্রতিশেধক আছে। তবে টিকার স্বল্পতা রয়েছে।
প্রাদুর্ভাবটি শুরু হওয়ার পর থেকে ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি লোককে টিকা দেয়া হয়েছে।
পার্শ্ববর্তী রুয়ান্ডা ও উগান্ডায়ও স্বাস্থ্য কর্মীরা টিকাদান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে শুক্রবার মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে যে, দেশটির পূর্বাঞ্চলে সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যূত হওয়া হাজার হাজার মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিয়ে রয়েছে।
এদের মধ্যে প্রায় ৭ হাজার লোক একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে পানির উৎস বলতে পার্শ্ববর্তী একটি নদী। সেখানে পয়নিষ্কাশন ও প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত টয়লেট নেই।