বহুমাত্রিক উন্নত দেশ গড়তে গণমাধ্যমের সহায়তা কামনা তথ্যমন্ত্রীর

686

ঢাকা, ২ মে, ২০১৯ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশপ্রেম ও মমতাময় একটি বহুমাত্রিক উন্নত দেশ গড়ে তুলতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু স্বাধীনতার সঙ্গে সাংবাদিকদেরও কিছু দায়িত্ববোধ থাকা উচিত।
তথ্যমন্ত্রী আজ জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ক্লাব সভাপতি সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত ‘গণমাধ্যম চিত্র : পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় একথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আআমস আরেফিন সিদ্দিক সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গাজী টিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।
প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রিয়াজুদ্দিন আহমেদ, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ওমর ফারুক, দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুল কাইউম মুকুল, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী এবং এনএইচকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি পারভীন আহমেদ।
ড. হাছান বলেন, গণমাধ্যম হলো একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া একটি যুক্তিনির্ভর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি বহুমাত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, প্রায় তিন বছর আগে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশ থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং তা শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রকাশ ও প্রচারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, এ সময় দেশে খাদ্যে ঘাটতি ছিল, কিন্তু বিশ্বে একটি ঘণবসতিপূর্ণ দেশ হওয়ার পরও বাংলাদেশ এখন খাদ্য রফতানি করছে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে পাঁচটি জিডিপি প্রবৃদ্ধি সম্পন্ন দেশের একটি। তিনি বলেন, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
গত দশ বছরে বর্তমান সরকার যে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে এই অগ্রগতি তারই সাক্ষী উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নের অনেক সূচকে বাংলাদেশ এখন ভারত ও পাকিস্তানকেও অতিক্রম করেছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সময়ের প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সকলের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতে অনেক দেশে এ ধরনের আইন রয়েছে এবং বাংলাদেশেও এ আইন করা হয়েছে। দেশে এই আইনের কিছু অপব্যবহারের দৃষ্টান্তও রয়েছে বলে এ সময় তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই আইনে যাতে কেউ কোন রকম হয়রানি স্বীকার না হয় সেজন্য আমাদের যৌথ আলোচনার আয়োজন করা উচিত।
মন্ত্রী এসময় রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স’ প্রণীত স্বাধীন গণমাধ্যম সূচকে ৩৮ নম্বর ক্রমিকে থাকা যুক্তরাজ্যের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘একটি ভুল সংবাদ প্রকাশের কারণে যুক্তরাজ্যেও দেড়শ’ বছরেরও পুরোনো পত্রিকা ‘নিউজ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড’ এর প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেছে। ভুল তথ্য পরিবেশনের কারণে সেখানে ‘বিবিসি ওয়াল্ড’-এর একটি পুরো দলকে পদত্যাগ করতে হয়েছে, কিন্তু আমাদের দেশে এমন ঘটনা নেই। সেকারণেই তাদের সূচকে বাংলাদেশের চারধাপ অবনমন ভিত্তিহীন ও অগ্রহণযোগ্য।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে সরকার কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি সরকারের সঙ্গে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।