বাসস ক্রীড়া-২ : মেসির জোড়া গোলে লিভারপুলকে উড়িয়ে দিল বার্সেলোনা

213

বাসস ক্রীড়া-২
ফুটবল-চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
মেসির জোড়া গোলে লিভারপুলকে উড়িয়ে দিল বার্সেলোনা
বার্সেলোনা, ২ মে ২০১৯ (বাসস) : লিওনেল মেসির জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বুধবার লিভারপুলকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বার্সেলোনা। এই পরাজয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত ইউরোপের সর্বোচ্চ আসরে লিভারপুলের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে।
ফাইনালে খেলতে হলে আগামী মঙ্গলবার দ্বিতীয় লেগে ঘরের মাঠ এ্যানফিল্ডে লিভারপুলকে অতি বিস্ময়কর কিছু করে দেখাতে হবে। রেডদের সাবেক স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজের গোলেই কাল ক্যাম্প ন্যুতে ২৬ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল স্বাগতিক বার্সেলোনা। এরপর ম্যাচের শেষের দিকে মেসির দুই গোলে ফাইনালে পথ অনেকটাই নিশ্চিত করেছে কাতালান জায়ান্টরা। মেসির দুই গোলের দ্বিতীয়টি ছিল ট্রেডমার্ক ফ্রি-কিক থেকে। একই সাথে এর মাধ্যমে তিনি বার্সার হয়ে ৬০০তম গোল করার মাইলফলক স্পর্শ করেন।
মেসির কার্লিং শট যখন লিভাপুলের রক্ষন দেয়াল ও গোলরক্ষক এ্যালিসনকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ায় তখন রেড বস জার্গেন ক্লপের হাসি ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। কিন্তু এই গোলেই তার দলের বড় পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে। বার্সেলোনার সাথে তারা প্রথমার্ধে সমান তালে লড়াই করে খেলার পর দ্বিতীয়ার্ধেও শুরুটাও ভালই হয়েছিল। মোহাম্মদ সালাহ’র শট পোস্টে না লাগলে এ্যাওয়ে গোলও হয়ত লিভারপুল পেয়ে যেত। কিন্তু মেসির পরপর দুই গোল সব হিসাব পাল্টে দেয়। মেসি ও সুয়ারেজ মূলত সেই কাজটাই করেছে যা তার পুরো মৌসুমেই করার চেষ্টা করেছে। এই দুজনের কাছ থেকে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এ পর্যন্ত গোল এসেছে যথাক্রমে ৪৭ ও ২৭টি।
তবে ইউরোপের অন্যতম দুটি গতিময় দলের কাছ থেকে যে ধরনের ফুটবল আশা করা হয়েছিল তার শতভাগ না হলেও অনেকটাই পূরণ হয়েছে। প্রথমার্ধটা ছিল টানটান উত্তেজনায় ভরা। আক্রমন-পাল্টা আক্রমনে সমর্থকরা দারুন এক লড়াই উপভোগ করেছে।
ফিরতি লেগটা বার্সেলোনার জন্য অনেকটাই স্বস্তিদায়ক হবে। ইতোমধ্যেই লা লিগার শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে। সপ্তাহের শেষে সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে নি:সন্দেহে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়রই বিশ্রাম পাচ্ছেন। অন্যদিকে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের থেকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে থাকা লিভারপুল শিরোপা স্বপ্ন পূরণে শনিবার নিউ ক্যাসেলের বিপক্ষে পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই মাঠে নামবে।
লা লিগায় শেষ ম্যাচে প্রথমার্ধটা বিশ্রামে থাকা মেসি গতকাল অনেকটাই সতেজ হয়ে মাঠে নেমেছিলেন। যার ছাপ দেখা গেছে তার পারফরমেন্সে। প্রথম থেকেই আক্রমনভাগে তিনি ছিলেন সপ্রতিভ। ম্যাচের শুরুতেই মাত্র ছয় গজ দুর থেকে মেসিকে আটকে দেন এন্ডি রবার্টসন। যদিও লিভারপুলের হয়ে শুরুটা দারুন করেছিলেন সাদিও মানে। পরপর দুটি আক্রমনে মানেকে আটকাতে বাধ্য হয়েছে বার্সা রক্ষনভাগ। ২৫ মিনিটে নেবি কিয়েটা ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ত্যাগে বাধ্য হন। তার স্থানে খেলতে নামেন জর্ডান হেন্ডারসন। এর মিনিটখানেক পরেই জর্ডি আলবার ক্রস থেকে সুয়ারেজ আলতো পায়ের ছোঁয়ায় বল জালে জড়ান। হেন্ডারসনের ক্রসে মাত্র আট গজ দুর থেকে আবারো গোলের সুযোগ নষ্ট করেন মানে।
দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুল ম্যাচে ফিরে আসতে নতুনভাবে শুরু করে। মিলনার ও সালাহ’র শট ফিরিয়ে মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগান রেডসদের হতাশ করেন। যদিও ম্যাচের শেষ দিকে সাত মিনিটে মেসি দুই গোল করে লিভারপুলকে আর ম্যাচে ফিরতে দেয়নি। ৭৫ মিনিটে সুয়ারেজের ভলি ক্রসবারে লেগে ফেরত আসলে মেসি কোন ভুল করেননি। এরপর ৮২ মিনিটে ৩০ গজ দুর থেকে মেসির ট্রেডমার্ক ফ্রি-কিকে বার্সার বড় জয় নিশ্চিত হয়।
বাসস/নীহা/১৪১০/স্বব