স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে অর্থ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ নম্বর চালু করা হবে : অর্থমন্ত্রী

466

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে অর্থ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ নম্বর চালু ও উচ্চতর পরামর্শ কমিটি করা হবে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির ৪০তম সভায় অর্থমন্ত্রী একথা বলেন।
এফবিসিসিআই’র সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় এসময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, “আমার দপ্তরে একটি অভিযোগ নম্বর থাকবে। যে কেউ যে কোন অভিযোগ যে কোন সময় করতে পারবেন। আশাকরি প্রথম দিকে অভিযোগের ফোন আসতে পারে, কিন্তু এক সময় আর ফোন আসার প্রয়োজন থাকবে না।” তিনি বলেন, “আমাকে পরামর্শ দেয়ার জন্য এফবিসিসিআই সদস্য, সরকারের সদস্য, এনবিআর-এর সাবেক কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি পরামর্শ কমিটি থাকবে। এই কমিটি পরামর্শ দিবে কিভাবে স্বচ্ছতা ও সঠিক সেবাটি নিশ্চিত করা যায়।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত ১০ বছরে সরকারের ধারাবাহিক সাফল্যে ৭ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সমর্থ হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় দাড়িয়েছে ১৯০৯ মার্কিন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে আমরা ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছি। জাতির পিতার সুযোগ্য উত্তরসূরী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসার পর তাঁর দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বে জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব নিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এবার আমাদের রাজস্ব আহরণ টার্গেট দুই লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। এটা অর্জন করতে হবে। তবে কাউকে কষ্ট দিয়ে ট্যাক্স আহরণ করা হবেনা। সবার সঙ্গে উইন উইন অবস্থানে রাজস্ব আদায় করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের চাহিদা বেড়েছে। দেশের উন্নয়নে আমাদের রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রায় ৪ কোটি মানুষ মধ্যম আয়ের। কিন্তু তাদের ১০ শতাংশও কর দেয়না। কর দেওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন সবাই যদি কর দিত এর পরিমাণ হত আরো অনেক বেশী, প্রায় দ্বিগুণেরও বেশী হয়ে যেত। দুর্ভাগ্য আমাদের যে যারাই কর প্রদান করেন, তারাই কর প্রদান করে যাচ্ছে। যারা কর প্রদান করেনা তারা অনেক বেশী আর্থিকভাবে শক্তিশালী হওয়া স্বত্ত্বেও কর না দিয়ে ক্রমাগতভাবে অব্যাহতি পেয়ে যাচ্ছে। আমরা জাতিকে এ অপবাদ থেকে মুক্তি দিতে চাই। যারা এতদিন অনেক বেশী মাত্রায় আয়কর দিয়েছেন তাদের জন্য বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। আর যারা দেননি তাদেরকে এবার কর প্রদান করতে হবে- তাদেরকে অবশ্যই করের আওতায় আনা হবে। এবারের কর ব্যবস্থায় মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে কোন ভাবেই কোন খাতে কর না বাড়িয়ে করের ক্ষেত্র প্রসারিত করে রাজস্ব বাড়ানো। কারও উপর করের বোঝা বাড়িয়ে নয় বরং করের আওতা বাড়িয়ে পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে, খেয়াল রাখা হবে কেউ যেন কষ্ট না পায়। আগামী ৫ বছর কর কমবে ছাড়া বাড়বে না, তবে করের আওতা বাড়বে।
আগামীর চাহিদা পূরণে শিক্ষা সংস্কারের উপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই শিক্ষার উপর অধিক গুরুত্ব দিয়ে আসছেন, এবং এ খাতে বর্তমানে আমরা মানসম্মত অবস্থানে পৌঁছেছি। সব ছেলেমেয়েরা স্কুলে যায়, আধুনিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুমের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে আজ এবং আগামীর চাহিদা পূরণ করতে গেলে আমাদের ক্লাসরুমগুলো সেভাবেই সাজাতে হবে।