বাসস দেশ-২৩ : মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে টালবাহানা করছে : জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান

131

বাসস দেশ-২৩
ব্র্যাক-কর্মশালা
মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে টালবাহানা করছে : জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান
ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মিয়ানমার নানা অজুহাত করে বাংলাদেশের সঙ্গে টালবাহানা করছে।
তিনি বলেন, এ সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
কাজী রিয়াজুল হক আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘রোহিঙ্গা সংকট : পূর্বাপর প্রভাব বিশ্লেষণ’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।
ব্র্যাকের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মশালায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, জাতিসংঘভুক্ত বিভিন্ন সংস্থা, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কর্মরত বিভিন্ন জাতীয়-আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও গণমাধ্যমের শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আবদুস সালাম, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) আবুল কালাম এনডিসি, ইউএনএইচসিআরের বাংলাাদেশ প্রতিনিধি স্টিভেন করলিস, হার্ভার্ড বিশ^বিদ্যালয়ের এফএক্সবি সেন্টার ফর হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সাচিত বালসারী।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে প্রথমেই রোহিঙ্গা সংকটের কারণ, বিভিন্ন রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের বর্তমান অবস্থা, সরকার ও জাতীয়-আন্তর্জাতিক বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ, এই উদ্যোগের সীমাবদ্ধতা, ফলাফল, ভবিষ্যৎ করণীয় ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ব্র্যাকের মানবিক সংকট ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির পরিচালক সাজেদুল হাসান বলেন, এই মানবসৃষ্ট সংকট নিরসনে পারস্পরিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা, ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অন্তরায় ও অগ্রাধিকার নির্ধারণ করাই মূলত এই অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য।
এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আবদুস সালাম বলেন, ‘কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনবিরোধী কাজে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে সবার সতর্ক থাকতে হবে।’
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) আবুল কালাম বলেন, এখানে রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটাতে গেলে স্থানীয় অধিবাসীদের সুবিধা-অসুবিধার দিকেও নজর রাখতে হয়। রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যতটা সম্ভব স্থানান্তর করা ভাল, ওখানে কক্সবাজারের চেয়ে ঝুঁকি কম। তবে কাউকে জোরপূর্বক পাঠানো হবে না।
ইউএনএইচসিআরের বাংলাাদেশ প্রতিনিধি স্টিভেন করলিস বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে শ্রমবাজারে স্থানীয়দের চাহিদা কমে যাওয়া, পরিবেশে বিরূপ প্রভাব আর দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেলে স্থানীয় জনগোষ্ঠী এটা সহজভাবে নেবে না। তাই সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখেই সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে হবে।
কর্মশালায় চারটি বিষয়ের উপর ভিন্ন ভিন্ন অধিবেশন হয়। বিষয় চারটি হলো- গণমাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট: বাস্তবতা ও অগ্রাধিকার; সঙ্কটের প্রকৃতি ও পরিবেশগত প্রভাব এবং ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা; দুর্বলকে সুরক্ষা প্রদান ও আশার সঞ্চার করা ; স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও শরণার্থী উভয়ের মতামত এবং অংশগ্রহণে টেকসই সমাধানের পথ নির্মাণ।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন ও আলোচনায় অংশ নেন আইওএম’র প্রতিনিধি প্যাট্রিক চ্যারিনন, আইএসসিজির তথ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা লিওনি ট্যাক্স, গ্রাউন্ড ট্রুথ সলুসনের সিনিয়র কর্মসূচি ব্যবস্থাপক কাই হপকিন্স, আইএসসিজির তথ্য ব্যবস্থাপনা ও বিশ্লেষণ ইউনিটের প্রধান ড. আর্টুরো ডি নিভেস, ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস-এর রিসার্চ কোঅর্ডিনেটর মোহাম্মদ বদিউজ্জামান, বিআইজিডির রিসার্চ ফেলো এবং সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহনেওয়াজ হোসেন, মানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ফেলো ড. কাওসার আহমেদ, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. ফারাহ কবির, ব্র্যাকের গবেষণা সম্বয়কারী ড. জুলকারিন জাহাঙ্গীর, অ্যাডভোকেসি কর্মসূচির কর্মসূচি প্রধান আজাদ রহমান, সেভ দ্য চিলড্্েরনের ডেপুটি ম্যানেজার চৌধুরী রাসেল মাহমুদ, ব্র্যাকের এইচসিএমপি প্রোগ্রাম হেড মো. আবদুস সালাম, ডব্লিউএফপির বাংলাদেশ প্রধান রিচার্ড এফ রাগান এবং ইউএনএইচসিআরের সিনিয়র প্রটেকশন অফিসার ড. হারুনো।
বাসস/সবি/জেডআরএম/১৯৩৮/কেকে