বাজিস-৩ : নড়াইলের মধুমতি নদীর ভাঙনরোধে সাড়ে ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ

153

বাজিস-৩
নড়াইল-মধুমতি নদী
নড়াইলের মধুমতি নদীর ভাঙনরোধে সাড়ে ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ
নড়াইল, ২৯ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : জেলার মধুমতি নদীর ভাঙনরোধে সাড়ে ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।দীর্ঘদিন ভাঙ্গনের শিকার লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের ঘাঘা এলাকায় মধুমতি নদীর ভাঙন প্রতিরোধ বাঁধের কাজ শুরু হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। ৪১০ মিটার স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের ফলে মধুমতি নদীর ভয়াবহ ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছে ঘাঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, স্লুইচগেটসহ অন্তত ১০০ বাড়িঘর ও ৫০০ শতাধিক গাছপালা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে লোহাগড়ার ভাঙন কবলিত ঘাঘা গ্রামে ৪১০ মিটার এলাকায় স্থায়ী প্রতিরক্ষায় বাঁধের কাজ চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হয়েছে। এ লক্ষ্যে জিও ব্যাগ ও ব্লক নির্মাণ কাজ চলমান। ইতোমধ্যে ৮ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। আরো জিও ব্যাগ ও ব্লক দেয়া হবে।২০২০ সালের মে মাসে কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন পাউবো’র কর্মকর্তারা।
ঘাঘা গ্রামের নূরুল হক শেখ বলেন, ১০ বছরের বেশি সময় ধরে নদী ভাঙনের কারণে পাঁকা রাস্তা, শত শত বাড়িঘর, গাছপালা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। গত বছরও বর্ষা মৌসুমে এ এলাকা ভেঙ্গেছে। নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে অনেক পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। অনেকে ভাড়া বাসায় আছেন। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন প্রতিরোধে কাজ শুরু করায় আমরা আনন্দিত। কাজটি যথাসময়ে শেষ হলে গ্রামবাসী উপকৃত হবে। ঘাঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক বাড়িঘর ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। ওই গ্রামের বাসিন্দা শেখ শাহিদুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে তার বসতভিটার ৭০ ভাগ মধুমতি নদীগর্ভে চলে গেছে। এছাড়া দীর্ঘদিন নদী ভাঙনের কারণে ঘাঘা গ্রামের শত শত মানুষ বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন।দীর্র্ঘদিন ধরে মধুমতি নদী ভাঙনের কারণে আমরা আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম। এখন কাজ শুরু হওয়ায় আমাদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে । কাজটি শেষ হলে এলাকার হাজারো মানুষের বাড়িঘর, ফসলি জমি ও গাছপালা নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে।
ঠিকাদার তারিক হাসান বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২০০ জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। আশা করছি মে মাসের মধ্যে জিও ব্যাগ ফেলা শেষ হবে। এছাড়া দ্রুত ব্লকও ডাম্পিং করা হবে। পাউবো নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সক্রিয় সহযোগিতায় কাজটি দ্রুত বাস্তবায়িত হচ্ছে।
কোটাকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মারিয়া হোসেন বলেন, ঘাঘা এলাকায় মধুমতি নদীতে স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধের ফলে ঘাঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, স্লুইচগেটসহ অন্তত ১০০ বাড়িঘর, ৫০০ শতাধিক গাছপালা ও জমি রক্ষা পাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানেওয়াজ তালুকদার বলেন, ‘খুলনার ভূতিয়ার বিল ও বর্ণাল-সলিমপুর-কোলাবাসুখালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও পুনর্বাসন’ প্রকল্পের (২য় পর্যায়) আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাঘা এলাকার মধুমতি নদীর ডান পাড়ের ৪১০ মিটার স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এ এলাকার নদী ভাঙন রোধ হবে এবং স্থানীয় জনগণসহ কোটাকোল ইউনিয়নবাসী এ কাজের সুফল পাবেন।
বাসস/সংবাদদাতা/কেইউ/১০২২/নূসী