বাজিস-১ : চুনারুঘাট সীমান্তে বসছে বর্ডার হাট

331

বাজিস-১
হবিগঞ্জ-বর্ডার হাট
চুনারুঘাট সীমান্তে বসছে বর্ডার হাট
হবিগঞ্জ, ২৭ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) জেলার চুনারুঘাট উপজেলার গুইবিল সীমান্তে বর্ডার হাট বসছে! এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন সীমান্তে হাটের স্থান পরিদর্শন শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। এদিকে বর্ডারে হাট বসানোর বিষয়ে বুধবার সিলেটে দুদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সীমান্তের কোন স্থানে বর্ডার হাট বসানো যায় এ বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইযের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে একটি পত্র আসে। জেলা প্রশাসকের পত্রের আলোকে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন ইকবাল সরজমিনে কয়েকটি সীমান্ত পরিদর্শন করেন। এসময় গুইবিল সীমান্তের ১৯৭০ পিলার সংলগ্ন নো ম্যান্স ল্যান্ডের ১.৮ একর জমি বর্ডার হাট এর জন্য উপযুক্ত বলে উপজেলা প্রশাসন নির্ধারণ করেন। স্থানীয়রা জানিয়েছে ঐ সীমান্তের ব্রিটিশ আমলে একবার হাট বসে ছিল।
এ বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন ইকবাল জানান, বর্ডার হাটের জন্য গুইবলি সীমান্তের ১৯৭০ মেইন পিলার সংলগ্ন স্থানে ১.৮ একর জমি নির্ধারণ হয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে উক্ত সীমান্তে হাট বসানোর বিষয়ে একট্রি প্রস্তাবনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।বিষযটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মন্ত্রনালয় থেকে এ বিষয়ে সার্ভেটিম পাঠিয়ে সার্ভে করে উভয় দেশের বাণিজ্য মন্ত্র্রণালয়ের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ একমত হলে উক্ত স্থানে বর্ডার হাট বসতে পারে। তিনি বলেন, বর্ডার হাট হলে সীমান্তে চোরাচালান কমে আসবে। স্থানীয়রা নানা পণ্য হাট থেকে কিনতে পারবে। এতে দুদেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বও বাড়বে। এছাড়া পর্যটনের ক্ষেত্রেও প্রসারতা লাভ করবে।
এদিকে বাংলাদেশ ভারতের বর্ডার হার্ট নিয়ে গত মঙ্গল ও বুধবার সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুদিন ব্যপী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐ সম্মেলনে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশে পক্ষে ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ শফিকুল ইসলাম এতে নেতৃত্ব দেন। এতে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোঃ এমদাদুল হকও উপস্থিত ছিলেন। ভারতের ১০ সদস্যেল প্রতিনিধি দলের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ভুপিন্দর এস বাল্লা।
সীমান্ত হাটের প্রথম যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের জুলাই মাসে কুড়িগ্রাম জেলার বালিয়ামারি সীমান্তে সোনাভরি নদের তীরে। উদ্দেশ্য ছিল সীমান্তের দুই পাড়ের মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকা-কে চাঙ্গা করে একদিকে তাঁদের জীবিকার সংস্থান করা এবং অন্যদিকে তাদের জীবন যাত্রার মানের উন্নয়ন। এর আর একটি উদ্দেশ্য ছিল দু’দেশের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি, ভালবাসা এবং ভাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করা। বর্তমানে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে ১০টি বর্ডার হাট রয়েছে। এটি ২২টিতে পর্যায়ক্রমে উন্নীত করা হবে বলে দুদেশের বর্ডার হাট স্মারক কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী বর্তমানে সংশ্লিষ্ট জেলায় উৎপাদিত কৃষি ও তৈরি পণ্য ছাড়াও বর্ডার হাটে দুই দেশের অধিবাসীরা মেলামাইন ক্রোকারিজ, ফলের জুস ও টয়লেট্রিজ জাতীয় শিল্প পণ্য ছাড়াও স্থানীয়ভাবে উৎপন্ন কৃষিজাত পণ্য, তাজা ও শুঁটকি মাছ, ডেইরি বা পোল্ট্রি পণ্য, কাঠ ও বেতের তৈরি পণ্য ও হস্তশিল্পজাত পণ্য কেনাবেচা করছেন। চুক্তি অনুযায়ী দু’দেশের ২৫ জন করে মোট ৫০ বিক্রেতা পণ্যবিক্রি করতে পারতেন। দু’দেশের সীমান্ত এলাকার ৫ কিলোমিটারের মধ্যে যাদের বসবাস শুধু তারাই বর্ডার হাটের ক্রেতা-বিক্রেতা হতে পারবেন। ইতোপূর্বে দেড় হাজার করে দু’দেশের ৩ হাজার ক্রেতাকে বর্ডার হাটে পণ্য কেনার অনুমতি পত্র দেয়া হয়। হাটে ভিজিটর এন্ট্রি ফি হচ্ছে ২০ টাকা। বর্তমান বর্ডার হাটের ক্রয়সীমা ২০০ ডলার বা ১৬ হাজার টাকা অর্থাৎ প্রত্যেকে ১৬ হাজার টাকার পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। বেচাকেনায় বাংলাদেশী টাকা ও ভারতীয় রুপী ব্যবহার করা হবে। এছাড়ার বর্ডার হাটের একজন বিক্রেতা দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকার মালমাল বিক্রি করতে পারেন। তবে তা শর্তশিথীল করে বিক্রয়সীমাও বাড়ানো যাবে।
বাসস/সংবাদদাতা/কেইউ/১০২৬/নূসী