দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ৯০ কোটির বেশি সেবা গ্রহণ

638

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : দেশে নতুন করে ২০০৯ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো চালুর পর থেকে গত ১০ বছরে সেবা গ্রহনের সংখ্যা প্রায় ৯০ কোটির বেশি। এর মধ্যে নারী ও শিশু সেবা নিয়েছেন প্রায় ৭২ কোটি।
সারাদেশে মোট ১৩ হাজার ৭৪৩ টি ক্লিনিকের প্রতিটি থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন নারী, পুরুষ ও শিশু চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন। সেবাগ্রহীতাদের শতকরা ৮০ ভাগই নারী ও শিশু। আগামী ২০২২ সাল নাগাদ সরকার মোট কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৪ হাজার ৮৯০ টি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক সেবা কার্যক্রমের সূচনা করেন।
বর্তমানে সরকারের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠন, বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় দেশের গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য পৌঁছানোর লক্ষে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট গঠন ও আনুষাঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন-২০১৮’ পাশ করা হয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সারাদেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রতি মাসে মহিলা ও শিশুদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। অপুষ্ঠি চিহ্নিত করে পুষ্টি উন্নয়নের লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকে ৫ বছরের নীচে শিশুদের গ্রোথ মনিটরিং এন্ড প্রমোশন (জিএমপি) কার্ড ও মুয়াক ব্যবহার করে পুষ্টি পরিমাপ করা হয়। এছাড়াও বছর ব্যাপী প্রতিটি ক্লিনিকে ২০ রকমের ওষুধ ও অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রন সামগ্রী (খাবার বড়ি ও কনডম) সরবরাহ করা হয়।
এবিষয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের লাইন ডাইরেক্টর ডা. মো. আবুল হাসেম খান বাসসকে জানান, পুনরুজ্জীবিতকরণের পর থেকে (অর্থাৎ ২০০৯ সালে থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত) কমিউনিটি ক্লিনিকে মোট ভিজিটরের সংখ্যা ৯০ কোটির বেশি। সারাদেশে মাসে গড়ে ৯০ লাখ হতে ১ কোটি ভিজিট এবং দৈনিক গড়ে ভিজিট সংখ্যা ৪০ জন। সেবাগ্রহীতাদের শতকরা ৮০ ভাগই নারী ও শিশু।
তিনি বলেন, মোট ভিজিটরের মধ্যে ২ কোটি অধিক কেস উন্নত ব্যবস্থাপনার জন্য উচ্চতর সেবা কেন্দ্র বিশেষ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার করা হয়েছে। প্রায় ৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক প্রসব সম্পন্ন হচ্ছে। মা ও শিশুর কোন রকম ক্ষতি ছাড়াই এ পর্যন্ত ৭৭ হাজার স্বাভাবিক প্রসব সম্পন্ন হয়েছে এবং এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক আজ এক অনুষ্ঠানে বলেন, জনমুখী এ কার্যক্রম ১৯৯৬ সালে গৃহীত হয়, বাস্তবায়ন শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দেশে ১০ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত ও অধিকাংশই চালু করা হয় এবং জনগণ সেবা পেতে শুরু করে। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকার ক্ষমতায় এলে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থা ২০০৮ সাল পর্যন্ত চলমান থাকে।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার আবারও ক্ষমতায় এলে ২০০৯ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক পুনরুজ্জীবিতকরণ কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচীতে কমিউনিটি বেজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) অপারেশনাল প্ল্যান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।