টেকসই ব্যবসা অনুসরণ করে দেশ ৮ শতাংশ জিডিপি অর্জনে সক্ষম হয়েছে : শিল্পমন্ত্রী

240

ঢাকা, ১৮ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, টেকসই ব্যবসা অনুসরণের ক্ষেত্রে কোন ধরণের আপস না করে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
রাজধানীর একটি হোটেলে ‘আজকের স্থায়িত্ব, আগামী দিনের উন্নত ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশে অবস্থিত নরওয়ে, সুইডেন এবং ডেনমার্ক দূতাবাসের সহায়তায় নরডিক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এনসিসিআই) এ সেমিনার আয়োজন করে।
এনসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত চারলোটা স্কালাইটার, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন এবং নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন বিশেষ অতিথি ছিলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
অনুষ্ঠানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পানি পরিশোধন ও ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিজাতকরণ এবং অনলাইন সেফটি বিশেষজ্ঞরা আলোচনায় অংশ নেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, নরডিক অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোর সাথে বাংলাদেশের চমৎকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। এ সম্পর্ক ক্রমেই উন্নয়ন সহযোগী থেকে বাণিজ্যক অংশীদারিত্বে রূপ নিচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে নরডিকভুক্ত দেশগুলোতে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি কৃষিপণ্য, হাইটেক সামগ্রি, আইটি পণ্য ও সেবা রপ্তানি হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের পণ্য রপ্তানি করছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, এদেশের অনেক কারখানা ইতোমধ্যেই ব্যবসায়িক স্থায়ীত্ব ও দক্ষতা বৃদ্ধির অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কারখানাগুলো বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, পানি সাশ্রয়ী রং, রাসায়নিক ও নবায়ণযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারের মত পরিবেশ সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আজকের সেমিনার বাংলাদেশে টেকসই বিজনেস প্রাকটিস গড়ে তুলতে ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সেমিনারে টেকসই উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের শিল্পায়নে স্থায়ীত্ব এবং ব্যবসায়ে নৈতিকতার চর্চা জোরদারে শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ‘ন্যাশনাল সাসটেইনিবিলিটি রিপোর্টিং’ চালুর পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেন, শিল্প কারখানায় প্রচলিত ধ্যান-ধারণা ও বিজনেস প্রাকটিস পরিবর্তন করে কোন ধরণের খরচ ছাড়াই উৎপাদনশীলতা এবং স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ লক্ষ্যে তারা সরকারি পৃষ্ঠাপোষকতায় শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ আবাসন, স্বাস্থ্য সেবা এবং শিশুদের শিক্ষার সুযোগ করে দেয়ার তাগিদ দেন।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, তৈরি পোশাকখাতে বাংলাদেশের ৬৮টি কারখানা ইতোমধ্যে গ্রিন ফ্যাক্টরির স্বীকৃতি পেয়েছে। আরও ৩শ’টি কারখানা এ স্বীকৃতির তালিকায় রয়েছে। সরকার, উন্নয়ন সহযোগী এবং উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে তৈরি পোশাক শিল্পে পরিবেশ, শ্রমিকের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও ব্যবসায়িক নৈতিকতার ক্ষেত্রে ব্যাপক গুণগত পরিবর্তন এসেছে। তারা নরডিক অঞ্চলের দেশগুলোর পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের অন্যান্য শিল্পখাতে গুণগত পরিবর্তন আনার পরামর্শ দেন।