বাজিস-৬ : ছুটির দিনে ঈদের জমজমাট কেনাবেচা খুলনা নগরীতে

231

বাজিস-৬
খুলনা-বেচাকেনা
ছুটির দিনে ঈদের জমজমাট কেনাবেচা খুলনা নগরীতে
খুলনা, ৯ জুন, ২০১৮ (বাসস) ; মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ উপলক্ষে ছুটির দিনে ক্রেতাদের পদচারণায় জমে উঠেছে শিল্পনগরী খুলনার বিপণী বিতানগুলো। ঈদ ঘনিয়ে আসায় বৃদ্ধি পাচ্ছে বেচা-বিক্রি। আতর-টুপি থেকে জামা-কাপড় আর জুতার দোকানেই ভিড় বাড়ছে। ছুটির দিনে সেই চাপটা আরও বেশি। অভিজাত বিপণী বিতান, মার্কেট থেকে ফুটপাত পর্যন্ত সর্বত্র ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ঈদের আকর্ষণীয় পোশাকে নগরীর সব বিপণী বিতান সেজেছে নতুন সাজে। শপিংমলগুলোতে রয়েছে আকর্ষণীয় ছাড়, নগদ মূল্যহ্রাস, উপহারসহ বিভিন্ন পুরস্কার চলবে ঈদের চাঁদ রাত পর্যন্ত।
গতকাল শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন বিপণী বিতানগুলোতে ক্রেতাদের প্রচুর ভিড় ছিল। কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করেন নগরীর বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।
নিউমাকের্ট, শপিং কমপ্লেক্স, জলিল টাওয়ার, রেলওয়ে মার্কেট, ডাকবাংলা মোড়, শিববাড়ি এলাকা, খালিশপুর বিআইডিসি রোড, চিত্রালী বাজার, হাউজিং বাজার, দৌলতপুর বাজারসহ শহরের বিপনী বিতান ও মার্কেট থেকে শুরু করে ফুটপাত সর্বত্রই ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
আজ শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় বেলা বাড়ার সাথে সাথে দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। দেশি-বিদেশি সব ধরনের থান কাপড় ও তৈরি পোশাক, প্রসাধনী, ঘর সাজানোর নানা উপকরণ পাওয়া যাচ্ছে এসব মার্কেটে। ঈদ উপলক্ষে এসব মার্কেটে তরুণ-তরুণী, শিশু ও বৃদ্ধ সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, থ্রিপিস, জুতা-স্যান্ডেল, কসমেটিকস, গয়না, দর্জিবাড়িÑসব কিছুই রয়েছে। এখানে কম দামের পোশাকের পাশাপাশি বেশি দামের ‘এক্সক্লুসিভ’ পোশাকও মেলে মূল্য অনুযায়ী। আর অনেক মার্কেটে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে রয়েছে কুপনের ব্যবস্থা।
নগরীর শিববাড়ী এলাকার দর্জি বাড়ির মোঃ মিজানুর রহমান জানান, পাঞ্জাবী, শার্ট, প্যান্ট, ফতুয়া, গেঞ্জি এর চাহিদা রয়েছে। বিক্রিও বেড়েছে। এখানে ১০৯০ টাকা থেকে ২৬৯০ টাকা মূল্যের শার্ট, ১৪৯০ থেকে ১৮৯০ টাকা মূল্যের পাঞ্জাবী, ১৪৯০ থেকে ২৬৯০ টাকা মূল্যের গেঞ্জি, ৫৯০ থেকে ১২৯০ টাকা মূল্যের ফতুয়া পাওয়া যাচ্ছে।
নগরীর নিউ মার্কেটে মায়ের সাথে ঈদ বাজার করতে এসেছেন বিএল কলেজের এইচএসসি ফল প্রত্যাশী জুলিয়া আক্তার। তিনি বলেন, ‘ঈদের পূর্ব মুহূর্তে মার্কেটগুলোতে ভিড় বেশি থাকে। তাই আগে ভাগে বাজার করে নিচ্ছি। এখনও অনেক ভীড় রয়েছে। একটি থ্রি পিচ কিনেছি। ঘুরে দেখছি আরো কিনবো। পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্যও কেনাকাটা করবো।
নগরীর রেলওয়ে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে শিশু, কিশোর, তরুণ-তরুণী ও বয়স্ক সকল ধরনের মানুষের পদচারণা বেড়েছে। ছুটির দিন থাকায় বিক্রিও বেড়েছে। এখানে ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৪ হাজারের উর্ধ্বে সকল শ্রেণীর মানুষের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া জুতা, স্যান্ডেলের দোকানগুলোতেও ভীড় লক্ষ্য করা যায়।
নগরীর নিউ মার্কেটের টার্চ অব ডিফারেন্স’র বিক্রেতা মোঃ শামিম হোসেন রাতুল বলেন, এখানে শিশু কন্যাদের লং ফ্রক ৩৪৫০ থেকে ৪২৫০ টাকা মূল্যের লং ফ্রক, গার্ল স্ক্যাট সেট ২৪৫০ থেকে ৩২৫০ টাকা, বড় মেয়েদের করতি বা ওয়ান পিস ২৬৫০ থেকে ৪২৫০ টাকা ও মহিলাদের জন্য ২৪৫০ থেকে ১২৪৫০ টাকা মূল্যের থ্রিপিচ পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভীড়ও বাড়ছে।
ছুটির দিনে কেনাকাটায় আসা কোনো কোনো ক্রেতা দাম বেশি রাখার অভিযোগ করেছেন। তাঁদের একজন নগরীর দৌলতপুর বাজারে পোশাক কিনতে আসা সোহাগ আসিফ। তিনি বলেন, দোকানিরা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দাম রাখছেন। তারা ইচ্ছামতো দাম হাঁকাচ্ছেন। তার মধ্যেও দরকষে ১৫০০ টাকা মূল্যের একটি জিন্সের প্যান্ট, ৮০০ টাকা দিয়ে একটি টি শার্ট ও ৫২৫ টাকা দিয়ে স্যান্ডেল কিনেছি।
খালিশপুর মার্কেটের মাসুম নামের এক দোকানী বলেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দোকানে ক্রেতার সংখ্যা বাড়ে। তাই দোকানে অতিরিক্ত লোকও রাখা হয়েছে। তবে খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের মিলগুলোর শ্রমিকদের ঈদের পাওনা এখনও পরিশোধ না করায় আশানুরূপ ভীড় বাড়েনি। শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করা হলে ঈদের কয়েকদিন আগে বেচা-বিক্রি আরো বেড়ে যাবে।
বাসস/সংবাদদাতা/১৬৫০/জহ/মরপা