চেলসিকে হারিয়ে আবারো শীর্ষে লিভারপুল

205

লিভারপুল, ১৫ এপ্রিল ২০১৯ (বাসস) : ক্রিস্টাল প্যালেসকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে প্রিমিয়ার লীগ টেবিলের শীর্ষে ম্যানচেস্টার সিটির অবস্থান মাত্র কয়েক ঘন্টা স্থায়ী ছিল। দিনের শেষ ম্যাচে চেলসিকে ২-০ গোলে পরাজিত করে গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট আদায় করে নিয়ে লিভারপুল আবারো নিজেদের শীর্ষে ফিরিয়ে এনেছে। মোহাম্মদ সালাহ’র দুর্দান্ত গোলে লিভারপুলের জয় নিশ্চিত হয়। আর এই জয়ে জার্গেন ক্লপের দল আরো একবার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সিটিজেনদের উপর শিরোপা ধরে রাখার মিশনে চাপ বজায় রাখলো।
প্রথমার্ধ গোলশূন্য ড্র থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধের ৫ মিনিটে ডেডলক ভাঙ্গেন সাদিও মানে। দুই মিনিট পর সালাহ দুর পাল্লার শক্তিশালী শটে এ্যানফিল্ডে জয় নিশ্চিত হয় রেডসদের। একইসাথে সিটির থেকে দুই পয়েন্ট এগিয়ে প্রথমবারের মত লিগ শিরোপা জয়ে নিজেদের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখলো লিভারপুল। যদিও লিভারপুলের হাতে আর মাত্র চার ম্যাচ বাকি রয়েছে। এক ম্যাচ কম খেলা সিটির হাতে রয়েছে পাঁচ ম্যাচ।
এ্যানফিল্ডে কাল স্বাগতিকদের পারফরমেন্স এটাই প্রমাণ করেছে যে অবশেষে ২৯ বছরের শিরোপা খরা কাটানোর মত যোগ্যতা এই দলটির রয়েছে। রেডসদের শিরোপা জয়ের পথে শেষ বড় বাঁধা ছিল চেলসি। লিভারপুলের ম্যানেজার হিসেবে ক্লপের ২০০তম ম্যাচে কোচকে দারুন এক জয় উপহার দিয়েছে শিষ্যরা। অন্যদিকে সিটির সামনে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে অপেক্ষা করছে টটেননহ্যাম, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মত শক্ত প্রতিপক্ষ। যে কারনে ক্লপের দল কিছুটা হলেও সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বলে ধরে নেয়া যায়। উল্ফসের বিপক্ষে এ্যানফিল্ডে শেষ ম্যাচে সম্ভাব্য শিরোপা জয়ের উৎসব করার আগে লিভারপুলের সামনে রয়েছে কার্ডিফ, হাডার্সফিল্ড ও নিউক্যাসলের চ্যালেঞ্জ।
এদিকে চতুর্থ স্থানে থাকা চেলসির জন্য এই পরাজয়ে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের জায়গা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়লো। পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও আর্সেনালের থেকে ব্লুজরা মাত্র দুই ও তিন পয়েন্টে পিছিয়ে রয়েছে।
ক্লাবের সাবেক কিংবদন্তী টমি স্মিথের মৃত্যু ও হিলসবোরো ট্র্যাজেডি (যেখানে ৯৬জন লিভারপুল সমর্থক নিহত হয়েছিলেন) ৩০তম বার্ষিকীকে সামনে রেখে গতকাল এ্যানফিল্ডের পরিবেশ কিছুটা গুমট ছিল। ম্যাচের শুরুতে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। ২০১৪ সালে চেলসির কাছে পরাজিত হওয়ায় লিগ শিরোপাটা ম্যানচেস্টার সিটির হাতে তুলে দিয়েছিল লিভারপুল, যা এখনও ভুলতে পারেনা রেডস সমর্থকরা। কিন্তু ক্লপের বিশ্বাস বর্তমান দলটি অতীতের স্মৃতি নিয়ে বসে নেই। বর্তমানকে সামনে রেখে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এই দলটির মূল ব্রত।
ম্যাচের শুরুতেই মানের নিখুঁত ক্রসে সালাহ’র ভলি চেলসি গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগা দারুণভাবে রক্ষা করেন। এ্যানফিল্ডে শেষ আটটি ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিয়েই খেলতে নেমেছিল চেলসি। ম্যাচের প্রথম থেকে তার প্রমানও দিয়েছিল হ্যাজার্ড, উইলিয়ান, কান্টেরা। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে ডেভিড লুইজ উইলিয়ানের দিকে বল বাড়িয়ে দিলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি এই ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। প্রথমার্ধে এন্টোনিও রুডিগারের ইনজুরিতে চেলসি কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়ে। আর সেই সুবিধাকে শতভাগ কাজে লাগিয়ে ৫১ মিনিটে রবার্তো ফিরমিনোর ফ্লিকে জর্ডান হেন্ডারসনের ক্রস থেকে মানে দলকে এগিয়ে দেন। দুই মিনিট পর ২৫ গজ দূর থেকে সালাহ’র শক্তিশালী শট এ্যানফিল্ডকে জয়ের উৎসব এনে দেয়। মৌসুমে এটি ছিল মিশরীয় তারকার ২২তম গোল। ম্যাচের শেষভাগে গোল পরিশোধের সুযোগ পেয়েও দু’বার তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন বেলজিয়াম অধিনায়ক হ্যাজার্ড।