বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ জাতীয় জীবনে আরো সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক : রাষ্ট্রপতি

218

ঢাকা, ১৩ এপ্রিল ২০১৯ (বাসস) : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ প্রত্যাশা করেছেন, অতীতের গ্লানি, দুঃখ, জরা মুছে, অসুন্দর ও অশুভ পেছনে ফেলে নতুন কেতন উড়িয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ জাতীয় জীবনে আরো সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আজ এক বাণীতে তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। আগামীকাল রোববার সারা দেশে জাতি উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবে।
উৎসবমুখর বাংলা নববর্ষের এই দিনে রাষ্ট্রপতি দেশবাসীসহ বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান, “শুভ বঙ্গাব্দ ১৪২৬।
তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ উৎসব সর্বজনীন ও অসাম্প্রদায়িক। এর মধ্যে নিহিত রয়েছে বাঙালির আত্মপরিচয় এবং জাতিসত্তা বিকাশের শেকড়। স্বাধীনতা পূর্বকালে বাঙালির জাতীয় সংস্কৃতি ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধের ওপর বারবার আঘাত এসেছে। নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতিকে ভিন্নধারায় প্রবাহিত করতে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে ভিনদেশী ভাষা ও সংস্কৃতি। ‘কিন্তু বাঙালি জাতি তা কখনো মেনে নেয়নি। তাইতো প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতি ও জাতিসত্তা বিকাশের প্রবল শক্তি নিয়ে উপস্থিত হয়। জানান দেয় আমি সর্বজনীন। এখানে ধর্ম-বর্ণ-দল-মতের কোনো বিভেদ নেই। তাইতো এই উৎসবটি বাঙালির জীবনাচার, চিন্তা-চেতনা, বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে একাকার হয়ে মিশে আছে আবহমান কাল থেকে। বাংলা নববর্ষ তাই কেবল আনুষ্ঠানিকতানির্ভর কোনো উৎসব নয়; বরং তা বাঙালির ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, শেকড় সন্ধানের অবিনাশী চেতনাবাহী দিন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলা নববর্ষের এই বর্ণিল উদযাপন মানুষের মাঝে অনাবিল আনন্দ, উৎসাহ-উদ্দীপনা আর সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে আসে। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বাংলার লোকজ-সংস্কৃতির মূল্যবান অনুষঙ্গ যেমন,যাত্রাগান, পালাগান, পুতুলনাচ, হালখাতা, অঞ্চলভিত্তিক লোকসংগীত, খেলাধুলাসহ গ্রামীণ মেলা যেমন প্রাণ ফিরে পায়, তেমনি বাংলার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প হয়ে ওঠে উজ্জীবিত। ব্যবসা বাণিজ্যেও এর ইতিবাচক প্রভাব তাৎপর্যপূর্ণ।
আবদুল হামিদ বলেন, আমাদের বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃত। পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা ২০১৬ সালে জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে, যা বাঙালি হিসেবে বিশ্বের বুকে আমাদের মর্যাদাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ঋদ্ধ। যেখানে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস বা সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। পারস্পরিক সহমর্মিতা, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি যে জাতির চিরকালীন ঐতিহ্য তা কেউ নস্যাৎ করতে পারবে না। বাংলা নববর্ষের চেতনা অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে দিনটি জাতীয় জীবনে প্রেরণা এবং শক্তি হিসেবে কাজ করবে।