বাজিস-২ : নড়াইলের গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য অষ্টক গান

186

বাজিস-২
নড়াইল- অষ্টক গান
নড়াইলের গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য অষ্টক গান
নড়াইল, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : নড়াইলের গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য ধরে রেখেছে অষ্টক গান। বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অষ্ট সখীসহযোগে গান লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঘরানা হলো অষ্টকগান। সাধারণত চৈত্র সংক্রান্তিকে সামনে রেখে গ্রামে গ্রামে, হাট-বাজারে এ গান পরিবেশিত হয়ে থাকে।
জানা গছে, নড়াইলের রাধা-কৃষ্ণ, শিব-দূুর্গা, রামায়ণ-মহাভারতের কাহিনী ছাড়াও পণপ্রথা, সাম্প্রদায়িক প্রসঙ্গ, কৃষি সমস্যা, বৃক্ষ রোপণ, সমাজের অসঙ্গতি বা শিক্ষামূলক বিষয় প্রভৃতি অষ্টকগানের বিষয়বস্তু। অষ্ট সখীসহযোগে এ গান পরিবেশিত হয় বলে একে অষ্টক গান বলা হয়েছে। এটি একটি গোষ্ঠীবদ্ধ নৃত্যসহ সাঙ্গীতিক পরিবেশনা। সামনে অষ্ট সখী এবং পেছনে হারমোনিয়াম, বেহালা, বাঁশি, কাসি, কর্তালসহযোগে এ গান পরিবেশিত হয়। অষ্টক গান বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি অংশ। নড়াইল সদরের বাহিরডাঙ্গা গ্রামের প্রয়াত স্বভাবকবি বিপিন সরকার অসংখ্য অষ্টকগান ও অষ্টক যাত্রাপালা লিখেছেন এবং সুর করেছিলেন।
প্রবীণ ব্যাক্তিদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, যুগ যুগ ধরে নড়াইল পৌর এলাকার বাহিরডাঙ্গা, দুর্গাপুর, বাঁশভিটা, মুলিয়া, এগারখানসহ বিভিন্ন এলাকার নমঃশুদ্র সম্প্রদায় লোকসংস্কৃতির এ ঘরানাকে লালন করে আসছে।
অষ্টকগানের দলের সাথে কথা বলে জানাগেছে, শহরের বিভিন্নস্থানে আমাদের মত অনেক দল অষ্টকগান পরিবেশ করে থাকে। বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে এবং বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অষ্টকগান পরিবেশন করেন এসময় বাসা-বাড়িক মালিক বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওই গানের দলকে খুশি মনে অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে। এ অর্থ দিয়ে পূজা পর্বণ করা হয় বলে তারা জানান।
অষ্টক গানের শিল্পী অশোক বিশ^াস বলেন, চৈত্রমাস যাওয়ার শেষের দিকে আমাদের দল প্রতিবছরই এ গান পরিবশেস করে থাকে।
শান্তিলতা বিশ^াস বলেন, দশবছর আগেও নড়াইলে অনেকগুলো দল ছিল যারা অষ্টকগান পরিবশে করত। এখন হাতে গোনা কয়েকটি দল বিভিন্ন বাসা বাড়ি ও বাজারে অষ্টক গান পরিবেশন করে থাকে।
নড়াইল পৌরসভার বাহিরডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা সহকারী অধ্যাপক গোলকচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘মুরুব্বিদের কাছে শুনেছি, নড়াইল অঞ্চল থেকেই অষ্টকগানের সৃষ্টি এর ধারাবাহিকতা এখনও বহমান রয়েছে। এটি নড়াইলের একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ সাংস্কৃতি।
বাসস/সংবাদদাতা/১০২০/নূসী