দেশের বিদ্যমান আইন মেনে বিদেশী টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার করতে হবে : তথ্যমন্ত্রী

684

ঢাকা, ১১ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দেশের বিদ্যমান আইন মেনে বিদেশী টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার করতে ক্যাবল অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিজ্ঞাপনমুক্ত বিদেশী চ্যানেল প্রচারের পাশাপাশি ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগে ব্রত হওয়ার জন্যও ক্যাবল অপারেটরদের নির্দেশনা দেন। ড. হাছান মাহমুদ আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কোয়াব সমন্বয় পরিষদের সাথে এক বৈঠকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আজহারুল হক ও মিজান-উল-আলম এসময় উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে আইনগতভাবে কেউ বিদেশী চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারে না। ইতিমধ্যেই আমরা এ ব্যাপারে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’ ডাউনলিংকের অনুমতি যারা পেয়েছেন তাদেরকে নোটিশ করা হয়েছে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা নোটিশের জবাব দিয়েছেন। তাদের পক্ষ থেকে কিছু ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে। ড. হাছান বলেন, বাকি ব্যবস্থা কতটা এবং কিভাবে করবেন এ ব্যাপারে তারা ১৫ দিন সময় চেয়েছেন। ‘আমরা সেই সময় মঞ্জুর করেছি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডাউনলিংক করা চ্যানেল বিতরণকারীদের বক্তব্য হচ্ছে- ক্যাবল নেটওয়ার্ক যারা পরিচালনা করেন তাদের কিছু ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী তাদের বিদেশী চ্যানেল সম্প্রচার করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, এই আইন শুধু বাংলাদেশে আছে তা নয়, পাকিস্তান ও ভারতে যেসব বিদেশী চ্যানেল দেখানো হয় সেসব চ্যানেলে পকিস্তান ও ভারতের বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন ছাড়াই দেখানো হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো চ্যানেল অন্যদেশের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারে না। এ ধরনের আইন ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ সব জায়গায় আছে। বাংলাদেশে সেটি মানা হচ্ছিল না।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমারা সেই আইন প্রয়োগ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। দু’টি প্রতিষ্ঠানকে আমরা চিঠি দিয়েছি তাদের বক্তব্য হচ্ছে, এই ক্ষেত্রে ক্যাবল নেটওয়ার্ক যারা পরিচালনা করেন তাদেরও কিছু ভূমিকা রয়েছে। সে বিষয়ে আপনাদের তৎপর হতে হবে।’ তথ্যমন্ত্রী পর্যায়ক্রমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই দেশের সকল জেলার ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আনা এবং বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোকে তাদের ফ্রিকোয়েন্সি পাবার ক্রমানুযায়ী ক্যাবল নেটওয়ার্ককে সম্প্রচারের নির্দেশনা দেন। অতিশিগগিরই টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন এ্যাটকো কোয়াবকে বাংলাদেশী টিভি চ্যানেলের ক্রম তালিকা পুনরায় সরবরাহ করবে। ‘দেশে প্রায় ৬ হাজার কেবল অপারেটর প্রায় ৩ কোটি গ্রাহকের কাছে দেশী ও বিদেশী টেলিভিশন চ্যানেল পৌঁছে দিচ্ছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুমতি দেন। তখন থেকে বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৩৩টি চ্যানেল অন-এয়ারে আছে। ৪৪টি চ্যানেলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। যেটি পশ্চিম বাংলার চেয়েও অনেক বেশি।
পশ্চিম বাংলা ও কোলকাতায় এতো চ্যানেল নেই উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকার যে গণমাধ্যমের বিকাশে যে কাজ করছে এতগুলো চ্যানেল সেটিরই বহিঃপ্রকাশ।
ক্যাবল অপারেটর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক এস এম শামসুল রহমান শিমুল, সদস্য কাজী বর্ণ উত্তম, সৈয়দ হাবিব আলীসহ নেতৃবৃন্দ বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেন।