বাজিস-১৪ : বৈশাখী শাড়ী বুননে ব্যস্ত টাঙ্গাইলের তাঁতীরা

139

বাজিস-১৪
টাঙ্গাইল তাঁত শাড়ী
বৈশাখী শাড়ী বুননে ব্যস্ত টাঙ্গাইলের তাঁতীরা
টাঙ্গাইল, ১০ এপ্রিল ২০১৯ (বাসস): বৈশাখী শাড়ী বুননে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন টাঙ্গাইল তাঁতপল্লীর তাঁতীরা।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে এ বছর শাড়ী শিল্পে নতুন বৈচিত্র্য সংযোজনে তাঁতশিল্প বাজারে এনেছে হাইব্রিড নামক লাল সাদা সংমিশ্রণের অপরূপ সৌন্দর্যের শাড়ী।
জানা যায়, এ বছর টাঙ্গাইল জেলার নলশোঁধা, পাথরাইল, নলুয়া, বড়টিয়া, চিনাখোলা, মঙ্গলহোড়, করটিয়া, এনায়েতপুর, কালিহাতী উপজেলার বল্লা, রামপুরসহ প্রায় সব তাঁত পল্লীগুলোতেই বৈশাখী কাপড় বুননের কাজ ব্যাপকভাবে চলছে। এ শিল্পে শুধু পুরুষরাই নয়, বাড়ির মহিলারাও এ কাজে যথেষ্ট শ্রম দিচ্ছে। কেউ সুতা ছিটায় উঠানোর কাজে, কেউ সুতা পাড়ি করার কাজে, আবার কেউ সুতা নাটাইয়ে উঠানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বৈশাখের আগমন মুহুর্তে তাঁত পল্লীগুলোতে কাপড় তৈরির প্রচন্ড ব্যস্ততায় মহিলারাও পুরুষের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছেন।
তাঁত পল্লীর সোনা মিয়া, রফিক, সুমন নামের কয়েকজন তাঁত শ্রমিক জানান, প্রতি বছর ঈদ ও পুজা ব্যতিত পহেলা বৈশাখকে ঘিরে বাজারে শাড়ীর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এই শাড়ীর চাহিদা পূরণে তাদের দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়। গ্রাহকদের চাহিদামত বিভিন্ন দামের শাড়ী বুনন করছে তারা। একটি শাড়ী বুননে সর্বনি¤œ ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা মজুরী পাচ্ছে। বিশেষ দিনটি উপলক্ষ্যে শাড়ী বুননে তাদের ভালো উপার্জন হচ্ছে ।
পাথরাইল তাঁতপল্লীতে ঢাকা থেকে শাড়ী কিনতে আসা ফাতেমা বেগম জানান, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ী খ্যাতি সম্পন্ন। এ শাড়ীর গুণ ও মান সমাদৃত। বৈশাখের নতুন ও ভালো মানের শাড়ী ঢাকা থেকে কিছুটা কম দামে কিনতে এই তাঁতপল্লীতে এসেছেন। বেশ কয়েকটি বৈশাখী শাড়ী কিনেছেন বলেও জানান তিনি। তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ পাথরাইল ও চন্ডি এলাকার কয়েকজন নারী ও পুরুষ ক্রেতা জানান, এবারের বৈশাখ উপলক্ষে টাঙ্গাইল তাঁতে নিত্য নতুন ডিজাইনের অনেক শাড়ি বাজারে এসেছে। কিন্তু দাম গত বছরের তুলনায় একটু বেশি। এরপরও ব্যাপক ভীড় জমছে টাঙ্গাইলের এই তাঁতপল্লীর শাড়ির দোকানগুলোতে।
ধুলটিয়ার বিশিষ্ট তাঁত ব্যবসায়ী উজ্জল হোসেন বলেন, বৈশাখ উপলক্ষ্যে দেশ জুড়ে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ীর চাহিদা অনেক। এ বছর হাইব্রিড নামক নতুন বৈশাখী শাড়ী তারা বাজারে এনেছে। দেশের প্রায় প্রতিটি জেলা থেকেই তাদের তৈরী শাড়ী সংগ্রহ করতে পাইকারী ও খুচরা ক্রেতা ভীড় জমাচ্ছে। এ বছর তারা সর্বনিন্ম ১ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা মূল্যমানের শাড়ী বাজারে এনেছে। পাথরাইল এলাকার বিশিষ্ট তাঁত কাপড় ব্যবসায়ী রঘুনাথ বসাক বলেন, বৈশাখ বাঙ্গালীদের একটি বড় উৎসব। এদেশের নারীদের এ উপলক্ষ্যে লাল ও সাদা রংয়ের সংমিশ্রণে প্রস্তুতকৃত শাড়ী কেনাটাও এক রকম অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে তিনিও এ বছর হরেক রকমের শাড়ীর সমারোহ ঘটিয়েছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় তার বিক্রিও এ বছর ভালো হচ্ছে বলে জানান।
করটিয়া কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাজাহান আনছারী জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। পহেলা বৈশাখ জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল বাঙ্গালীর একটি বড় উৎসব। এ উৎসবটিকে সামনে রেখে তাঁতীরা ভালো মানের কাপড় প্রস্তুত করায় দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারী ক্রেতাদের এই হাটে সমাগম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে তাঁতীরা কাপড়ের দাম ভালো পাচ্ছেন বলে তিনি জানান।
বাসস/সংবাদদাতা/১৭৪৫/মরপা