বাজিস-৭ : চাঁদপুরে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি

108

বাজিস-৭
চাঁদপুর-আলু উৎপাদন
চাঁদপুরে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি
চাঁদপুর, ১০ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে কয়েকবার বৃষ্টিপাত হওয়াতে জেলার কৃষকরা চলতি মৌসুমে ঠিকমত আলুর চাষাবাদ করতে পারেনি। তাই আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। জেলায় চলতি (২০১৮-২০১৯) মৌসুমে আলু উৎপাদন হয়েছে ২,০২,০২৪ মে.টন এবং চাষাবাদ হয়েছে ৮,৮৩৫ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে (২০১৮-২০১৯) এ জেলায় আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০,৬৯০ হেক্টর এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২,২৪,৫০০ মে.টন।
চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় আলুর চাষাবাদ ও উৎপাদনে বিভিন্ন জাতের আলু চাষাবাদ করে থাকে চাঁদপুরের কৃষকরা। কম-বেশি সব উপজেলাই আলুর ফলন ও চাষাবাদ হয়ে থাকে। বিগত ক’বছর ধরেই চাঁদপুরে ব্যাপক আলু উৎপাদন হচ্ছে। বিশেষ করে আলু উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোর মধ্যে হচ্ছে সফরমালী,রালদিয়া,মুন্সীরহাট, বাগাদি, বালিয়া, মতলবদক্ষিণ উপজেলা, নারায়ণপুর, কুমারডুগি, শাহাতলী, কেতুয়া, ফরিদগঞ্জের চান্দ্রা, বালিথুবাসহ বিভিন্ন এলাকায়।
চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরে চাঁদপুর জেলায় ব্যাপক আলু চাষাবাদ করা হলেও ২-৩ দিন বৃষ্টিপাত হওয়ায় প্রাথমিক ভাবে চাষাবাদকৃত আলু রোপণের সময় কিছুটা নষ্ট হয়েছে। আলুর আবাদি জমি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে প্রাপ্ত তথ্য মতে, চাঁদপুর সদরে এবার ১,৭৩৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে ও উৎপাদন হয়েছে ৩৬,৭২২ মে.টন।মতলব উত্তরে ৬৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন হয়েছে ১১,৩৮০ মে.টন ।মতলব দক্ষিণে ৩,০ ৬৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন হয়েছে ৭২,৩৩৫ মে.টন । হাজীগঞ্জে ৮৪০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন হয়েছে ১৮,৭৭৭ মে.টন । শাহারাস্তিতে ২৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন হয়েছে ৪৯৫ মে.টন। কচুয়ায় ২,২৬০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন হয়েছে ৫৭,৬৩০ মে.টন। ফরিদগঞ্জে ৯৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন হয়েছে ১,৭৫৮ মে.টন। হাইমচরে ১৬৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন হয়েছে ২,৯৩০ মে.টন।
চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আবদুল মান্নান জানান চাঁদপুরে আলু চাষীগণ বার বার অর্থনেতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও এবার আলু রোপণের পর পরই বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে আলু চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।
চাঁদপুর জেলা একটি নদীবিধৌত কৃষি ভিক্তিক অঞ্চল বিধায় কৃষকরা সময়মত চাষাবাদ, বীজবপন ও সঠিক পরিচর্যায় পারদর্শী। জেলার ব্যাংকগুলো যথারীতি ফসল ঋণ প্রদান করে কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছে। এ দিকে চাঁদপুরের সাথে নৌ,সড়ক ও রেলপথের উত্তম যোগাযোগ থাকায় দেশের সর্বত্র কৃষিপণ্য পরিবহন অন্যান্য জেলার চেয়ে খুবই সহজ ও নিরাপদ।
চাঁদপুর জেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আবদুল মান্নান জানান,‘ চলতি মৌসুমে (২০১৮-২০১৯) এ জেলায় আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০,৬৯০ হেক্টর এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২,২৪,৫০০ মে.টন। কিন্তু রোপণের সময় বৃষ্টিপাত হওয়াতে লক্ষ্যমাত্রা মত জমিতে আলু চাষাবাদ করা যায়নি। গত দু’বছর ধরে আলু চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে মার খাচ্ছে। সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও তারা ঝুঁকির মধ্যে থাকে। চাষিদের বাঁচাতে চাঁদপুরে আরো সংরক্ষণাগার স্থাপন প্রয়োজন। তবে আসন্ন রমজানে ও ঈদুল আযহা পর্যন্ত তারা কৃত্রিমভাবে সংরক্ষণ করা আলু ভালোভাবে বাজারজাত করতে পারলে হয়তো অনেকটাই বেঁচে যাবে।’
বাসস/সংবাদদাতা/আহো/১৪৪০/নূসী