বাজিস-৪ : মাগুরায় ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে খাল ও নদী সংস্কারের কাজ চলছে

176

বাজিস-৪
মাগুরা-সংস্কার
মাগুরায় ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে খাল ও নদী সংস্কারের কাজ চলছে
মাগুরা, ৫ মার্চ ২০১৯ (বাসস): জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১৪ কোটি ৩৬ লাখ ১৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬৭.১৩ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন ও ছোট নদী সংস্কারের কাজ চলছে। এ ছাড়াও আরো তিনটি খাল পুনঃখনন টেন্ডারের কাজ শেষ হয়েছে। এ তিনটি খালের সংস্কার কাজ দ্রুতই শুরু হবে। এসব কাজ বাস্তবায়ন হলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ, অধিক খাদ্য শস্য উৎপাদন, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, মৎস্য চাষ বৃদ্ধি, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সাধারণ গৃহস্থালির কাজে পানি ব্যবহার, অগভীর নলকুপে আর্সেনিকের মাত্রা কমে আসাসহ এসব এলাকার মানুষ নানা সুবিধা পাবে বলে মনে করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ‘৬৪ জেলায় অভ্যন্তরীণ ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প’ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সমন্বিত পানি সম্পদ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা (সাউথ ওয়েস্ট) প্রকল্পের ’ আওতায় এ পুনঃখনন ও সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। খাল ও নদীপাড় এলাকায় বসবাসকারি মাগুরা সদর উপজেলার রামনগর এলাকার অমরেশ বিশ্বাস,শ্রীপুর উপজেলার হাজরাতলা গ্রামের কৃষক জয়পদ বিশ্বাস, শালিখা উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের কাশেম বিশ্বাস, হায়দার সর্দার, রমেশ শিকদারসহ অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ১০ থেকে ১৫ বছর এসব ছোট নদী ও খাল সংস্কার না হওয়ায় পানি সরবরাহ বিঘিœত হওয়ার পাশাপাশি জমিতে সেচ কাজসহ নানাবিধ অসুবিধা হচ্ছিল। এগুলোর সংস্কার কাজ সম্পন্ন হলে আবারও খাল ও নদীগুলোতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়াসহ বিভিন্ন সুবিধা পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে, ‘৬৪ জেলায় অভ্যন্তরীণ ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের’ আওতায় মাগুরা জেলায় ৪ কোটি ৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৫.২৫ কিলোমিটার পুনঃখননের কাজ চলছে। এর মধ্যে শালিখা উপজেলার অভ্যন্তরে ১ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ব্যয়ে বেগবতী নদীর ৮ কিলোমিটার, সদর ও শ্রীপুর উপজেলার মুচিখালি খাল ৭৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬.৯০০ কিলোমিটার, সদর উপজেলার দীঘলগ্রাম খাল ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬.১৫০ কিলোমিটার, ২৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে শ্রীপুর উপজেলার ডি-৭ এমকে ৪.২০০ কিলোমিটার খাল ও ছোট নদী ও খাল পুনঃখনন কাজ চলছে। চলমান এসব কাজ ইতিমধ্যে ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে এসব এলাকার চলমান কাজ শেষ হবে।
এ ছাড়া এ প্রকল্পের অধিনে ১৩ কোটি ৯৮ লাখ ৫৮ হাজার টাকা ব্যয়ে জেলা ৩টি খালের ৬০ কিলোমিটার পুন:খনন কাজ শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যে শ্রীপুর উপজেলায় ৪ কোটি ৮২ লাখ ৬২ হাজার টাকা ব্যয়ে হানু নদী ও খাল খনন ২০.৪৫০ কিলোমিটার, সদর উপজেলার হাওরখালী খাল ৪ কোটি ৮৫ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৬ কিলোমিটার, ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে মহম্মদপুর উপজেলার এমডি-২ নামের খাল ২৩.৬০০ কিলোমিটার সংস্কার কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ২০২০ সালের মধ্যে এসব কাজ সম্পন্ন হবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
অপরদিকে ‘দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সমন্বিত পানি সম্পদ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রকল্প’ (সাউথ ওয়েস্ট) আওতায় ১০ কোটি ২৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা ব্যয়ে শালিখা ও সদরের বিভিন্ন খালের ৪১.৮৮কিলোমিটার পুনঃখনন চলছে। এর মধ্যে ৪৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩.৮৯০ কিলোমিটার কাঠালবাড়িয়া খাল, ৮২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪.৩৫০ কিলোমিটার সদরের কুচিয়ামোড়া খাল, ৭৬ লাখ ৫০হাজার টাকা ব্যয়ে ৩.৯০০ কিলোমিটার কোয়াতপুর খাল, ২ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১২.৭০০ কিলোমিটার কানুদা খাল, ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮.৯০০ দীঘলগ্রাম খাল, ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮.১৪০ কিমি কালিদাস খালের পুনঃ খনন কাজ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ২ কোটি ৯৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ব্যয়ে কালিদাসখালী আড়পাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজ চলছে। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে শুরু হওয়া এসব কাজ প্রায় ৭০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম খান মোজাহেদী জানান, ২০১৮ সালের জুন মাসে শুরু হওয়া এসব কাজের প্রায় ৭০ শতাংশই ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে এসব নদী ও খালের পুনঃখনন ও সংস্কার কাজ পূর্ণাঙ্গভাবে শেষ হবে আশা করছি। এটি বাস্তবায়ন হলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, অধিক খাদ্য শস্য উৎপাদন, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, মৎস্য চাষ বৃদ্ধি, জীব বৈচিত্ররক্ষাসহ এলাকার মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাসস/সংবাদদাতা/১৩৩৫/মরাপ