চলচ্চিত্র শিল্পকে বাণিজ্যিকভাবে সফল করতে একসঙ্গে কাজ করুন : শিল্পমন্ত্রী

313

ঢাকা, ৪ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন চলচ্চিত্র শিল্পকে বাণিজ্যিকভাবে সফল করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিদ্যমান নীতিমালার আলোকে চলচ্চিত্র নির্মাণে ঋণ সুবিধাপ্রাপ্তিসহ এ শিল্পের উন্নয়নে শিল্প মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক সহায়তা করবে।
জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস ২০১৯ উপলক্ষে আয়োজিত “বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা এবং উত্তরণের উপায়” শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী একথা বলেন।
এতে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বিশেষ অতিথি ছিলেন।
রাজধানীতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) গতকাল এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বিএফডিসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক লক্ষণ চন্দ্র দেবনাথের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেমিনার উপ-কমিটির আহ্বায়ক চলচ্চিত্র গবেষক মতিন রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও প্রদর্শক সমিতির আহবায়ক খোরশেদ আলম খসরু, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, চলচ্চিত্র অভিনেতা জায়েদ খানসহ শিল্পী, কলা-কুশলীরা আলোচনায় অংশ নেন। সেমিনার সঞ্চালনা করেন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে। শিল্প মন্ত্রণালয় প্রেক্ষাগৃহের উন্নয়নে স্বল্প সুদে কিংবা সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করবে উল্লেখ করে মন্ত্রী এ লক্ষ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য বিএফডিসি এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের স্বার্থ সুরক্ষায় মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের সরিয়ে দিতে হবে। এ লক্ষ্যে চলচ্চিত্র প্রযোজক, নির্মাতা, অভিনেতা, কলা-কুশলী, পরিবেশক, প্রদর্শকসহ সবাইকে আন্তরিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, দেশিয় সংস্কৃতির ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে সরকার দেশব্যাপী যাত্রা শিল্প প্রসারের উদ্যোগ নিচ্ছে। পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আধুনিক সিনেপ্লেক্স গড়ে ওঠবে এবং চলচ্চিত্র শিল্প সংশ্লিষ্টরা উপকৃত হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে সেমিনারে চলচ্চিত্র শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য ব্যক্তি স্বার্থ ভুলে চলচ্চিত্র প্রযোজক, নির্মাতা ও অভিনেতা, কলা-কুশলী, পরিবেশক, প্রদর্শকসহ সবাইকে পারস্পরিক স্বার্থ সুরক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন চলচ্চিত্র বোদ্ধারা। শুধুমাত্র ব্যক্তি বা শ্রেণি স্বার্থ চিন্তা করলে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তারা ।
সেমিনারে বক্তারা চলচ্চিত্র শিল্পে বিদ্যামান সমস্যা সমাধানে সিনেমা হলে ই-টিকেটিং চালুর পরামর্শ দেন। তারা এর পাশাপাশি সিনেমা হলগুলোর আধুনিকায়ন, হল মালিকদের পক্ষ থেকে প্রজেক্টরসহ স্বয়ংসম্পূর্ণ হল ব্যবস্থাপনা ও বুকিং এজেন্টের কমিশন পরিশোধ এবং সিনেমা প্রদর্শনের সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে প্রযোজকের পাওনা পরিশোধের তাগিদ দেন।
এ সময় বক্তারা শিল্পের তালিকায় চলচ্চিত্রের অবস্থান উন্নয়ন, পিক আওয়ারে হলগুলোর বৈদ্যুতিক বিল সাধারণ রেটে নির্ধারণ, পাইরেসিরোধ, বিপণন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, সিনেমা হলে সরকারি উদ্যোগে প্রজেক্টর সরবরাহসহ চলচ্চিত্র শিল্পখাতের উন্নয়নে সরকারের সহায়তা কামনা করেন।