কচা নদীতে ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ কাজ শুরু

451

পিরোজপুর, ৪ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আরও একটি স্বপ্নের সেতু বেকুটিয়া সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। চীন সরকারের অনুদান সহায়তায় বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের বেকুটিয়ায় কচা নদীর উপর ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের জমি অধিগ্রহণ, ভুমি উন্নয়ন, স্থাপনা অপসারণের প্রাথমিক কাজ ইতোমধ্যেই শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় যশোর থেকে শুরু করে ভোলা পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষ আনন্দিত হয়েছে। স্বপ্নের সেতু পদ্মার সাথে প্রায় একই সময় শেষ হবে বেকুটিয়া সেতুর নির্মাণ কাজ।
২০১৭ সালের জুন মাসে রাজধানীর সড়ক ভবনে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ব্রিজ ম্যানেজমেন্ট উইং এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পরিমল বিকাশ সুত্রধর এবং চীন সরকারের পক্ষে আর্ন্তজাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা এজেন্সির ডেপুটি ডিরেক্টর জিয়াং জিং ৮ম বাংলাদেশ-চীণ মৈত্রী সেতু নির্মাণের চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। প্রাথমিকভাবে এ মুল সেতু নির্মাণের খরচ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬শত ২০ কোটি টাকা। যার পুরোটাই চীন সরকার অনুদান হিসেবে দিতে সম্মত হয়েছে। মূল সেতুর দুই দিকের সংযোগ সড়কের জমি অধিগ্রহণের মূল্য এবং সড়ক নির্মাণের খরচ বহন করছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া নির্মাণ কাজে বিদ্যুৎ, মাটি ভরাট এবং চীনের প্রকৌশলীবৃন্দসহ চীনা কর্মীদের আবাসান ব্যবস্থার দায়িত্ব সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের। পিরোজপুর শহরে ৫ কিলোমিটার পূর্বে কঁচা নদীর ভাটিতে বেকুটিয়া ফেরিঘাটের সন্নিকটে এ সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। বেকুটিয়া ফেরিঘাট থেকে ৮শত ৩৫ মিটার দক্ষিণে এবং কাউখালী প্রাান্তের ফেরিঘাট থেকে ১১৫ মিটার উত্তরে ৯৯৮ মিটার দীর্ঘ ও ১০.৩ মিটার প্রসস্ত এবং সেতুর উভয়পাশে মোট ১৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যরে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। যাবতীয় নদী শাসন, আবহাওয়া. বাতাসের গতি. নদী ভাংগন সহ অন্যান্য বিষয় চীনা বিশেষজ্ঞদল কয়েকবার জরিপ করে এসে এলাকা ঘুরে সবকিছু চূড়ান্ত করার পরপরই এ সকল কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যায়।
এদিকে দীর্ঘদিনের সীমাহীন দুর্ভোগ লাঘব হতে যাওয়ায় এ অঞ্চলের ব্যবসায়ী সহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মুখেমুখে এখন পদ্মা ও বেকুটিয়া সেতু। বেকুটিয়া সেতুর কাজ সমাপ্ত হলে বেকুটিয়া নৈকাঠী ও চরখালী-টগড়া ফেরি সার্ভিসের আর কোন প্রয়োজন হবে না। এদিকে দেশের একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর পায়রা এবং সমুদ্র সৈকত সাগর কন্যা কুয়াকাটার সাথে সর্ববৃহৎ স্থল বন্দর বেনাপোল এবং সমুদ্র বন্দর মংলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করবে এ বেকুটিয়া সেতুটি।
বেকুটিয়া সেতু প্রকল্পের উপ প্রকল্প ম্যানেজার ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন জানান, এ সেতুটি নির্মিত হলে পিরোজপুর জেলার চারটি উপজেলার সাথে জেলা সদরের সরাসরি সড়ক সংযোগ হবে। পিরোজপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ই›ন্ডাষ্ট্রির সভাপতি মসিউর রহমান মহারাজ জানান, বেকুটিয়া সেতু নির্মিত হলে এ অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে এক ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হবে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান অকল্পনীয়ভাবে উন্নীত হবে।
পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক -সাইফ মিজান স্মৃতি মিলনায়তনে গতকাল বুধবার বিকেলে বিকুটিয়া সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে ক্ষতিগ্রস্থ ভূমি মালিকদের হাতে ৫৩ লক্ষ ৩৭ হাজার ৮০৬ টাকার চেক তুলে দেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো: সাজ্জাদ হোসেন। এময় জেলা প্রশাসনেরকর্মকর্তাবৃন্দ, সাংবাদিক এবং সড়ক ও জণপথ বিভাগের প্রকৌশলীগণ উপস্থিত ছিলেন।