করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব

341

ঢাকা, ২ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। একইসঙ্গে সংগঠনটি সবক্ষেত্রে করপোরেট করহার অন্ততপক্ষে ৫ শতাংশ হারে কমানোর সুপারিশ করেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবন সম্মেলন কক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর এপ্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়ার সভাপতিত্বে বাজেট আলোচনায় এনবিআরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ওসামা তাসীর বলেন, ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণীর করমূক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা রয়েছে। অথচ এই সময়ে মোট মূল্যস্ফীতি ২২ দশমিক ৫৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় করমুক্ত আয়ের সর্বোচ্চ সীমা পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করেন তিনি।
তিনি নীট সম্পদের মূল্য ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত শূন্য সারচার্জ এবং ৫ কোটি থেকে ১৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব করেন। এর পাশাপাশি তিনি করজাল সম্প্রসারণ ও করপোরেট ডিভিডেন্ডের আয়ের ওপর বিদ্যমান ২০ শতাংশ করের পরিবের্ত ১০ শতাংশ কর নির্ধারণের প্রস্তাব করেন।
ডিসিসিআই আগামী বাজেটে প্যাকেজ ভ্যাট বহাল রাখা এবং বার্ষিক টার্নওভার ৫০ লাখ টাকার উর্ধ্ব থেকে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত প্যাকেজ ভ্যাট প্রদানের সীমা হিসেবে নির্ধারণের প্রস্তাব করে।
এর জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া বলেন, আগামী অর্থবছরের জন্য যে বাজেট হবে সেটি ব্যবসাবন্ধব হবে। যাতে উৎপাদন ও শিল্পায়নের গতি বৃদ্ধি পায়। ব্যবসায়ীরা যেন কোন অসম প্রতিযোগিতার মুখোমুখি না হন। তিনি বলেন, আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হচ্ছে, সেখানে এমন উদ্যোগ থাকবে যাতে ব্যবসায় পরিবেশের উন্নতি ঘটে।
করজাল সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে মোশাররফ হোসেন বলেন, নতুন করদাতা তৈরির মাধ্যমে নিয়মিত করদাতাদের ওপর চাপ কমাতে চাই। এর জন্য আমরা সারাদেশে কর জরিপ শুরু করেছি। বিশেষ করে উপজেলা পর্যায়ে অনেক ব্যবসায়ী বা বড় আয়ের মানুষ আছেন, যারা কর দিচ্ছেন না। তাদেরকে করজালভুক্ত করতে উপজেলা পর্যায়ে জরিপ চালানো হচ্ছে।
এর আগে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)’র সঙ্গে বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ব্যবসায়ীরা যাতে অসম প্রতিযোগিতায় না পড়েন, এজন্য আন্ডার ইনভয়েস ও মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে কেউ যাতে পণ্য আমদানি না করতে পারে সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখব।
ব্যবসায়ীদের ওপর করচাপ কমাতে নতুন ভ্যাট আইনে করহার এক স্তরের পরিবর্তে একাধিক স্তর করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বলেন, বর্তমানে স্থানীয় বিভিন্ন শিল্পের প্রতিরক্ষণ হিসেবে কিছু কিছু খাতে কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে যৌক্তিক হারের চেয়ে উচ্চহারে শুল্ক-করের পার্থক্য রয়েছে। তিনি সকল ক্ষেত্রে মৌলিক কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী কাঁচামাল এবং মধ্যবর্তী কাঁচামাল ও তৈরি পণ্যের মধ্যে শুল্ক-করভারের পার্থক্য সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশে রাখার প্রস্তাব করেন।
মঙ্গলবার ডিসিসিআই ও বিসিআই ছাড়াও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, লিজিং ও মার্চেন্ট ব্যাংক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে এনবিআরের প্রাক-বাজেট আলোচনা হয়।