ভোলায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল হচ্ছে

338

ভোলা, ২ এপ্রিল, ২০১৯ (বাসস) : জেলার দৌলতখান উপজেলার খায়ের হাট এলাকায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল (মেটস)। খায়ের হাট ৩০ শয্যা হাসপাতালের চত্বরে প্রায় ৩ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হবে। গত ২৫ মার্চ ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ এটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। আগামী ২ বছরের মধ্যে এখানকার ৮টি ভবনের অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
ভোলার সিভিল সার্জন ডা. রথীন্দ্রনাথ মজুমদার বাসস’কে জানান, এসএসসি পাস করে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুলে ৪ বছর মেয়াদী কোর্সে শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ পাবে। সফলভাবে কোর্স সম্পন্ন শেষে বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে চাকুরির ক্ষেত্র তৈরি হবে শিক্ষার্থীদের। তারা চিকিৎসকদের সহযোগী হিসেবে মূলত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকবেন।
জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী নুর মোহাম্মদ বাসস’কে বলেন, প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ কোটি ৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এখানে ৫তলা ফাউন্ডেশনের ৩ তলা একাডেমিক ভবন হবে একটি, ৫তলা ফাউন্ডেশনের ৪তলা পর্যন্ত পুরুষ হোস্টেল একটি নির্মিত হবে। তিনি আরো বলেন, ৫তলা ফাউন্ডেশনের ৩ তলা পর্যন্ত মহিলা হোস্টেল হবে একটি, ১৫’শ বর্গফুটের প্রিন্সিপাল কোয়ার্টার ২তলা ফাউন্ডেশনের একটি, ৫তলা কোয়ার্টার ১২’শ ৫০ বর্গফুটের, ৬’শ বর্গফুটের ৩তলা কোয়ার্টার আরেকটি। একইসাথে গ্যারেজ কাম ড্রাইভার কোয়ার্টার হবে ২ তলা ও একটি সাব স্টেশন ভবন হবে।
সিভিল সাজর্ন আরো বলেন, এতদিন এ প্রতিষ্ঠানটি না থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসকদের সহোযোগী পদে চাকুরির জন্য আসতো। যোগদানের কিছুদিন পর তারা ঢাকা বা অন্যত্র বদলির চেষ্টা চালাতো। যা দক্ষ মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট স্বল্পতায় ভোগার অন্যতম কারণ ছিলো। ফলে চিকিৎসা সেবাদান কার্যক্রম অনেক কষ্টসাধ্য হতো। অনেক ক্ষেত্রে দক্ষ জনবলের অভাবে চিকিৎসা ব্যাহত হতো।
তিনি বলেন, তাই এ প্রতিষ্ঠানটি চালু হলে এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা এখানে পড়া-লেখা করার সুযোগ পাবে। একইসাথে স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে চিকিৎসকদের সহযোগীর স্বল্পতা দূর হবে আশা প্রকাশ করেন সিভিল সার্জন।
ভোলা প্রেসক্লাব সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম হাবিবুর রহমান মনে করেন, সরকারি স্বাস্থ প্রতিষ্ঠানগুলোতে দক্ষ মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট কিছু থাকলেও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে প্রশিক্ষিত সহযোগীর অভাব পরিলক্ষিত হয়। সে ক্ষেত্রে এটি চালু হলে স্থানীয় যুবক-যুবতীদের এসব ক্লিনিকে চাকুরি হবে। একইসাথে স্বাস্থ্য সহকারী সমর্স্যাও স্থায়ী সমাধান হবে।
এদিকে মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল নির্মাণের খবরে আনন্দ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। তারা বলছেন, এখন পল্লী এলাকায় এমন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগে খুশি তারা। খায়ের হাটের পাশের ইউনিয়ন দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান, গফুর সরদার ও সামসুল আলম বলেন, মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট পদের জন্য এখন দূরে গিয়ে লেখা-পড়া করতে হবেনা। ঘরের কাছেই তাদের সন্তানরা শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে। তরুণদের বেকারত্ব দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ প্রতিষ্ঠানটি।