প্রিমিয়ার লিগ : সুপার লিগ নিশ্চিত করলো আবাহনী, রূপগঞ্জ, শেখ জামালকে ১ রানে হারালো প্রাইম দোলেশ্বর

397

ঢাকা, ১ এপ্রিল ২০১৯ (বাসস) :
খেলাঘরকে হারিয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত করলো আবাহনী :
ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে সুপার লিগ নিশ্চিত করলো আবাহনী লিমিটেড। আজ অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচে আবাহনী ১৩২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে। এই জয়ে ৮ খেলায় ৭ জয় ও ১ হারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে থেকে টেবিলের শীর্ষেও থাকলো আবাহনী। অন্যদিতে, সমানসংখ্যক ম্যাচে ১ জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে খেলাঘর।
সাভারের চার নম্বর মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেয় খেলাঘর। ব্যাট হাতে নেমে ভালো শুরু করতে পারেনি আবাহনী। ৫৭ রানে ২ উইকেট হারায় তারা। জহিরুল ইসলাম ২৫ ও সৌম্য সরকার ১২ রান করে ফিরেন।
তবে নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাব্বির রহমানের ব্যাটিং দৃঢ়তায় বড় স্কোরের ভিত পায় আবাহনী। কিন্তু দলীয় ১৭৩ রানের মধ্যে শান্ত-সাব্বির ও অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন ফিরে গেলে বড় স্কোর নিয়ে সংশয়ে পড়ে আবাহনী। শান্ত ৬০, সাব্বির ৪৯ ও মোসাদ্দেক ১১ রানে আউট হন।
পরের দিকে মেহেদি হাসান মিরাজের ৫৪ বলে ৪৭ রানে ৮ বল বাকী থাকতে ২৬২ রানে গুটিয়ে যায় আবাহনী। খেলাঘরের রবিউল হক ৬৪ রানে ৫ উইকেট নেন।
জবাবে আবাহনীর বোলিং তোপে মাত্র ১৩০ রানেই গুটিয়ে যায় খেলাঘর। দলের পক্ষে মোসাদ্দেক ইফতেখার অপরাজিত ৩৬ ও শাহরিয়ার কমল ৩২ রান করেন। আবাহনীর সানজামুল ইসলাম ৩৬ রানে ৪ উইকেট, নাজমুল ইসলাম-মিরাজ ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

আবাহনীর পর সুপার লিগ নিশ্চিত করলো রূপগঞ্জ
আবাহনী লিমিটেডের মত ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে সুপার লিগ নিশ্চিত করলো লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জও। আজ অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচে রূপগঞ্জ ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে (বিকেএসপি)। এই জয়ে ৮ খেলায় ৭ জয় ও ১ হারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে পিছিয়ে থেকে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকলো রূপগঞ্জ। অন্যদিকে, সমানসংখ্যক ম্যাচে ২ জয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের অষ্টম স্থানে বিকেএসপি।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নেয় রূপগঞ্জ। ব্যাট হাতে নেমে দলীয় ২৬ রানে প্রথম উইকেট হারালেও দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বেধে দলকে ১০৩ রানে পৌঁছে দেন ওপেনার প্রান্তিক নওরোজ নাবিল ও শামিম হোসেন। নাবিল ৩৮ রানে থামলেও হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান শামিম। ধীর গতিতে খেলে ১০৭ বলে ৫২ রানে থামেন তিনি।
এরপর আর বিকেএসপি’র কোন ব্যাটসম্যানই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ভারতের পেসার ঋষি ধাওয়ানের বোলিং তোপে ৯ উইকেটে ১৮১ রানের বেশি করতে পারেনি বিকেএসপি। রূপগঞ্জের ধাওয়ান ৫১ রানে ৫ উইকেট নেন।
জবাবে ভালো শুরু না হলেও মোমিনুল হকের ১১২ বলে ৯৩ রানের সুবাদে জয়ের পথে সহজেই হাটতে থাকে রূপগঞ্জ। শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক নাইম ইসলামের ৩১, ওপেনার মেহেদি মারুফের ২৭ ও শাহরিয়ার নাফীসের অপরাজিত ১২ রানে ৫ ওভার বাকী রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রূপগঞ্জ। বিকেএসপির সুমন খান ও আব্দুল কাইয়ুম ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন রূপগঞ্জের ধাওয়ান।

রেজার রেকর্ডের দিন শেখ জামালকে ১ রানে হারালো প্রাইম দোলেশ্বর
ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে অষ্টম রাউন্ডের উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ১ রানে হারালো প্রাইম দোলেশ্বর স্পোটিং ক্লাব। ম্যাচে মাত্র ১৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন প্রাইম দোলেশ্বরের অধিনায়ক ফরহাদ রেজা। যা বাংলাদেশের লিষ্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরির রেকর্ড। এর আগেরটি ছিলো নাজমুল হোসেন মিলনের। ১৯ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।
এই জয়ে ৮ খেলায় ৬ জয় ও ২ হারে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে রয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর। সমানসংখ্যক ম্যাচে ৪ জয় ৪ হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে থাকলো শেখ জামাল।
বৃষ্টি ও ভেজা উইকেটের কারণে ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি ২৬ ওভারে নামিয়ে আনা হয়। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করতে নামে শেখ জামাল। ব্যাট হাতে উড়ন্ত সূচনা করেন প্রাইম দোলেশ্বরের দুই ওপেনার ইমরান উজ্জামান ও সাইফ হাসান। ৭৫ বলে ৯৭ রান করেন তারা। সাইফ ৩৬ রানে থেমে গেলেও হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ইমরান। ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৪ বলে ৭৫ রান করেন ইমরান।
দুই ওপেনারের পর মিডল-অর্ডারে সাদ নাসিম ও অধিনায়ক ফরহাদ জোড়া হাফ-সেঞ্চুরি করেন। দু’জনই মারমুখী মেজাজে ছিলেন। কিন্তু ব্যাট হাতে বেশি ভয়ংকর ছিলেন ফরহাদ। মাত্র ১৮ বলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নয়া রেকর্ড গড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৩টি চার ও ৬টি ছক্কায় ২০ বলে ৫৬ রান করেন ফরহাদ। পাশাপাশি সাদ নাসিমের ৩৬ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫১ রানে ২৬ ওভারে ৬ উইকেটে ২৩৯ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় প্রাইম দোলেশ্বর। শেখ জামালের সালাউদ্দিন শাকিল ৪০ রানে ৩ উইকেট নেন।
জবাবে ২৬ ওভারে ২৪০ রানের জয়ের লক্ষ্যে ৩০ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারায় শেখ জামাল। তবে আরেক ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেনের সাথে মিডল-অর্ডার চার ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে শেখ জামাল। ইমতিয়াজ ৩৪, ভারতের আনুস্তাপ মজুমদার ৪৪, অধিনায়ক নুরুল হাসান ৩৭ ও জিয়াউর রহমান ২১ বলে ৪৬ রান করে আউট হন। তবে অন্যপ্রান্ত দলের আশা ধরে রাখেন তানবীর হায়দার।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১১ রান দরকার ছিলো শেখ জামালের। কিন্তু প্রাইম দোলেশ্বরের ফরহাদের ঐ ওভার থেকে ৯ রানের বেশি নিতে পারেনি শেখ জামাল। ৩৬ রানে থাকা তানবীরকে থামিয়ে দেন ফরহাদ। ফলে ৯ উইকেটে ২৩৮ রান পর্যন্ত যেতে সক্ষম শেখ জামাল। প্রাইম দোলেশ্বরের আবু জায়েদ ও ফরহাদ ৩টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন ফরহাদ।