নড়াইলে ইরি-বোরোর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

435

নড়াইল, ১ এপ্রিল,২০১৯ (বাসস) : চলতি মৌসুমে নড়াইলের ৩ উপজেলায় ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। নড়াইল সদর, লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলায় ৪২ হাজার ৬শ’ ৯৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরোর চাষ হয়েছে। এসব জমিতে ১ লাখ ৮২ হাজার ৪৪৩ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নড়াইলের ৩ উপজেলা-সদর, লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠে ইরি-বোরো ধানের আধাপাকা সোনালী শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছে। ধান কাটা শেষ পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া থাকলে বোরের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যান্য বছরের মত এবারও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উন্নতমানের বীজ,পর্যাপ্ত সার ও কীটনাশক চাষিদের মাঝে সময়মতো সরবরাহ করায় বোরো চাষিরা বেশি জমিতে ধান চাষ করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ৪২ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৮২ হাজার ৪৪৩ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উপজেলাওয়ারী ইরি-বোরো ধান চাষ হচ্ছে-নড়াইল সদর উপজেলায় চাষ হয়েছে ১৯ হাজার ২শ’ ৯৯ হেক্টর জমিতে।এ উপজেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮১ হাজার ১৩৯ মেট্রিক টন চাল। লোহাগড়া উপজেলায় ধান চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৩শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে। এ উপজেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৮ হাজার ৬২৭ মেট্রিক টন চাল এবং কালিয়া উপজেলায় ধান চাষ হয়েছে ১৯ হাজার ৫৬ হেক্টর জমিতে। এ উপজেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৮২ হাজার ৬৭৭ মেট্রিক টন চাল।
নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়মিত তদারকি এবং কৃষকদের আগ্রহে প্রতি বছর এ অঞ্চলে রোপা ও বোনা আমন ধান কাটার পর ইরি-বোরোর আবাদ বাড়ছে।
বাসস’র এ প্রতিনিধি নড়াইল সদর উপজেলা,কালিয়া ও লোহাগড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে বোরো ধানের সোনালী শীষ দোল খাচ্ছে। আনেক জমির ধানের শীষ লালচে বর্ণ ধারন করেছে। আগাম রোপণ করা বোরো ধান চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে কাটা শুরু করা যাবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। চালের উৎপাদন বাড়াতে চলতি মৌসুমে কৃষকরা আগ্রহের সঙ্গে বেশি জমিতে ইরি-বোরোর চাষ করেছেন বলে তারা জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, মৌসুম শুরুর প্রথম থেকেই সঠিক পদ্ধতিতে হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল জাতের (উফশী) চারা রোপণ, সার প্রয়োগ ও সেচদানে কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিজ নিজ এলাকার বোরো চাষিদেরকে নিয়মিত মনিটরিং করছেন। লোহাগড়া উপজেলার আমাদা গ্রামের কৃষক আজমল হোসেন জানান, ইরি-বোরো ধান হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকদের প্রধান ফসল তাই প্রতি বছর তারা আগ্রহ সহকারে এ ধান চাষ করে থাকেন। কালিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের চাষি দাউদ শেখ জানান, তিনি এ বছর ২ একর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ করেছেন এবং ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারও ফলন ভালো হবে বলে তিনি জানান।