রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যকে বিশেষ ভূমিকা রাখার আহবান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর

307

ঢাকা, ২৯ মার্চ, ২০১৯ (বাসস) : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার পাশাপাশি সেদেশে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারকে বিশেষ ভূমিকা নেয়ার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি যুক্তরাজ্য এ ব্যাপারে জাতিসংঘে অব্যাহত কূটনৈতিক নেতৃত্ব দিবে, যাতে রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদ পরিবেশে ফিরে যেতে পারে।’
বৃহস্পতিবার লন্ডনে বাংলাদেশের ৪৮তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
যুক্তরাজ্যের লন্ডন্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন-আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশনে (আইএমও)-ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য, কূটনৈতিক কোরের সদস্যবৃন্দ, ব্রিটিশ এবং বাংলাদেশী-ব্রিটিশ কমিউনিটির জন্য এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম অনুষ্ঠানে অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী আর্ল হোয়ে, কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল পেট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড এবং আইএমও’র সেক্রেটারি জেনারেল কিটাক লীমসহ হাউজ অব লর্ডসের বেশ কয়েকজন সদস্য এবং ব্যারনেস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের (সমন্বয় ও সংস্কার) সচিব ড. মোঃ শামসুল আরেফিন, যুক্তরাজ্যে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ, উপমহাদেশের প্রখ্যাত কন্ঠশিল্পী রুনা লায়লা, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক এবং বিশিষ্ট অভিনেত্রী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শমী কায়সার।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যুক্তরাজ্য সরকার, সকল ব্রিটিশ ও বাংলাদেশী-ব্রিটিশ জনগণ এবং গণমাধ্যমকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন ও সহযোগিতা দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি তাদের এ সমর্থন রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত রাখারও আহবান জানান।
আজ শুক্রবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ঢাকা থেকে যুক্তরাষ্ট্র হয়ে কানাডা যাওয়ার পথে ১২ ঘন্টারও কম সময়ের জন্য লন্ডনে অবস্থান করেন। এ স্বল্প সময়ে তিনি বেশ কয়েকজন সিনিয়র ব্রিটিশ এমপি‘র সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ডের সঙ্গে বৈঠক করেন।
শাহরিয়ার আলম এছাড়াও হাউজ অব কমন্সে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
দ্বিতীয়বার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই ছিল পরারাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রথম লন্ডন সফর। এ সব সাক্ষাত ও আলোচনায় শাহরিয়ার আলম যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের সুদীর্ঘ সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা আশা করি আগামী বছর দু’দেশ একসাথে মিলে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি ঢাকা ও লন্ডনে উদ্যাপন করবো।’ এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার এডওয়ার্ড হীথ ও ব্যারন হ্যারল্ড উইলসন’র পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও বিশেষভাবে উদযাপন করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন আগামী দিনগুলোতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ব্যবসা, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা ও কৌশলগত সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।
সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অব্যাহত গতিতে এগিয়ে চলেছে। ‘আমরা আশা করছি তার নেতৃত্বে ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১ অনুযায়ী বাংলাদেশ উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে উন্নত, প্রগতিশীল ও ধর্ম নিরপেক্ষ একটি দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।’